স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গণবদলির তালিকায় মৃত ও অবসরে যাওয়া চিকিৎসকরাও রয়েছেন। কর্তৃপক্ষ বলছে, এটি অনাকাঙ্ক্ষিত ভুল। এ জন্য তারা তথ্য আপডেট না থাকাকে দায়ী করছেন। বিষয়টিকে ‘বিব্রতকর’ উল্লেখ্য করে তারা বলছেন, প্রজ্ঞাপন সংশোধন করা হচ্ছে।
জানা গেছে, করোনাভাইরাসের ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলায় দেশের বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হেলথ ইনস্টিটিউট থেকে এক হাজারেরও বেশি চিকিৎসককে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোয় সংযুক্তিতে পদায়ন করা হয়েছে। এর মধ্যে সোমবার (৫ই জুলাই) এবং রোববার (৪ঠা জুলাই) স্বাস্থ্য ক্যাডারের প্রায় এক হাজার ২৩৯ জন চিকিৎসকের বদলি ও পদায়নের আদেশ এসেছে। তবে এই বিশাল তালিকায় কয়েকজন চিকিৎসককে বদলি দেখানো হয়েছে যারা মৃত। শুধু তাই নয়, ইতিমধ্যেই যারা অবসরে গেছেন তাদের নামও ওই তালিকায় রয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার পর বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের বিব্রত হতেও দেখা গেছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব জাকিয়া পারভীন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে দেখা গেছে, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জীবেশ কুমার প্রামাণিক স্বপনকে একই মেডিকেল কলেজের হাসপাতালে বদলি করা হয়েছে।
কিন্তু তিনি গত ৬ই জানুয়ারি রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ৩১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং ২২তম বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তা ছিলেন।
একইসঙ্গে রংপুর মেডিকেল কলেজের গাইনি অ্যান্ড অবস বিভাগের ডা. ফেরদৌস আরা শেখ নামে আরও এক চিকিৎসককে বদলি করা হয়েছে তিনিও মৃত বলে জানা গেছে।
এছাড়া চাকরি থেকে অবসরে যাওয়া রংপুর মেডিকেল কলেজের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মমতাজ বেগম ও কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. গিয়াসউদ্দিনকেও বদলি করা হয়েছে আদেশে।
এ প্রসঙ্গে প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষরকারী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব জাকিয়া পারভীন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, বিষয়টি খুবই বিব্রতকর। তথ্য আপডেট না থাকায় এই ভুল হয়েছে। যা অনাকাঙ্ক্ষিত। ইতিমধ্যেই আমরা এ সব ভুল সংশোধন করে নতুন প্রজ্ঞাপন ইস্যুর কাজ শুরু করেছি।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক গণমাধ্যমকে জানান, দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে করোনার রোগী বাড়তে থাকায় হাসপাতালে চিকিৎসকরা হিমশিম খাচ্ছেন। এ কারণে করোনাকালীন সংকট থেকে উত্তরণের জন্য মেডিকেল কলেজগুলো থেকে চিকিৎসকদের হাসপাতালগুলোতে সংযুক্ত করা হয়েছে। করোনাকালীন সঙ্কট কেটে গেলে তারা আবার পূর্বের কর্মস্থলে ফিরে যাবেন। এটাকে বদলি বলা যায় না, তাদের হাসপাতালগুলোতে সংযুক্ত করা হয়েছে।