হেভিওয়েটদের বিদায় চলছে ইউরো ফুটবলে। পর্তুগাল, ফ্রান্স ও জার্মানির পর টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছে সুইডেনও। দারুণ জয়ে ৩২ বছর পর ইউরোর কোয়ার্টার ফাইনালে নাম লিখিয়েছে ইউক্রেন।
গ্লাসগোর হ্যাম্পডেন পার্কে মঙ্গলবার রাতে শেষ ষোলোর ম্যাচে সুইডেনকে ২-১ গোলে হারিয়েছে ইউক্রেন। অলেকসান্দার জিনচেঙ্কোর গোলে পিছিয়ে পড়ার পর সুইডেনকে ম্যাচে ফেরান এমিল ফর্সবার্গ। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা ১-১ গোলে ড্র। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটে। এই অর্ধে লাল কার্ড দেখেন সুইডেনের দানিয়েলসন। ১০ জনের দলে পরিণত হওয়া সুইডিশদের সঙ্গে এই সুযোগটা ভালোমতো কাজে লাগান আর্তেম। অতিরিক্ত সময়ে তার গোলেই কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট পায় ইউক্রেন। আন্তর্জাতিক ফুটবলে এটি ছিল আর্তেমের প্রথম গোল।
সুইডেন নকআউটে এসেছিল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে। তৃতীয় হওয়া সেরা চার দলের একটি হয়ে ইউক্রেন। সেই দলই দেখালো চমক। অথচ ইউক্রেন দলে নেই তারকা কোনো খেলোয়াড়। তবে ডাগআউটে তারকা আছেন একজন-কোচ আন্দ্রে শেভচেঙ্কো। খেলোয়াড়ী জীবনে এসি মিলানের হয়ে জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, ২০০৪ সালে ব্যালন ডিঅর জয়ী তিনি। তার হাত ধরেই ইউরোর পথচলায় আরেক ধাপ এগিয়ে গেল ইউক্রেন।
ম্যাচের শুরুতে তাদের চেপে ধরেছিল সুইডেন। প্রথম ভালো সুযোগটি পায় যদিও ইউক্রেন। একাদশ মিনিটে কাছ থেকে রোমান ইয়ারেমচুকের নেওয়া নিচু শট ডান দিকে ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক রবিন ওলসেন। ১৮ মিনিটে সুযোগ পান ফর্সবার্গ। সতীর্থের ক্রস ডি-বক্সে লাফিয়ে ঠিকমতো হেড করতে পারেননি তিনি। পরের মিনিটে ডি-বক্সে আলেক্সান্দার ইসাকের শট লক্ষ্যে থাকেনি।
২৭ মিনিটে এগিয়ে যায় ইউক্রেন। ডান দিক থেকে আন্দ্রে ইয়ারমোলেঙ্কোর ক্রসে প্রথম স্পর্শে বাঁ পায়ের জোরালো ভলিতে গোল করেন জিনচেঙ্কো ৯১-১)। প্রথমার্ধেই ম্যাচে সমতা আনে সুইডিন। প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে ফর্সবার্গের বাঁ পায়ের বুলেট গতির শট প্রতিপক্ষের এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে দিক পাল্টে জালে জড়ায় (১-১)।
৫৫ মিনিটে দুর্ভাগ্যের ফেরে গোল পায়নি ইউক্রেন। আট গজ দূর থেকে সিদরচুকের শট পোস্টে লাগে। পরের মিনিটে ডি-বক্সে ঢুকে ফর্সবার্গের নেওয়া শটও পোস্টে বাধা পায়। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা হয় ড্র। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ত্রিশ মিনিটে।
৯৯ মিনিটে ১০ জনের দলে পরিণত হয় সুইডেন। প্রতিপক্ষের আর্তেম বেসেদিনকে মারাত্মক ফাউল করে শুরুতে হলুদ কার্ড দেখেন মার্কাস দানিয়েলসন। পরে ভিএআরের সাহায্যে তাকে লাল কার্ড দেখান রেফারি। ওই সুযোগ কাজে লাগায় ইউক্রেন। ১২০ মিনিটের পর তিন মিনিট যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে আসে জয়সূচক গোল। বাঁ দিক থেকে সতীর্থের ক্রসে দুরন্ত হেডে সুইডিশ গোলরক্ষককে বোকা বানান আর্তেম। রোমাঞ্চকর জয়ে কোয়ার্টারে উঠার আনন্দে মাতে গোটা ইউক্রেন শিবির।
কোয়ার্টার ফাইনালের ম্যাচে আগামী শনিবার ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে ইউক্রেন।