ব্যাংক অ্যাকাউন্ট একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকার বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন। তিনি বলেছেন, ‘ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আমার ও আমার পরিবারের মৌলিক অধিকার। অথচ অন্যায়ভাবে আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ (স্থগিত) করা হয়েছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বর্তমান মেয়র তাপসের প্ররোচনায় এটা করা হয়েছে।’
আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সাঈদ খোকন। তিনি বলেন, ‘ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার ফলে আমাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে পারছি না, কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছি না। সমস্ত কাজকর্ম স্থবির হয়ে পড়েছে।’ অবিলম্বে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়া দাবি জানিয়েছেন সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে।
ডিএসসিসির সাবেক মেয়র বলেন, ‘এই শহরের জন্য দীর্ঘদিন আমি ও আমার পরিবার ভূমিকা রেখেছে। আমার পরিবারের একজন সদস্য ঢাকার পঞ্চায়েত সরদার ছিলেন। আমার বাবা ঢাকার প্রথম নির্বাচিত মেয়র। তার স্ত্রী অর্থাৎ আমার আমার বৃদ্ধ মায়ের অ্যাকাউন্টও ফ্রিজ করা হয়েছে। আমার ছোট বোনের অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হয়েছে। এভাবে তারা লাঞ্ছিত হবেন, এটা ঢাকাবাসী মেনে নেবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমি যদি ইচ্ছা করতাম এই শহরের একজন বড় ধনী হতে পারতাম। আমার বাবা ইচ্ছে করলে তিনি তা হতে পারতেন। কিন্তু আমরা তা করিনি।’
ঢাকাবাসীর কাছে তিনি প্রশ্ন রাখেন, ‘আওয়ামী লীগের জন্য, আমার নেত্রীর জন্য দীর্ঘ সময় ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি, জেল জুলুম অত্যাচার সহ্য করেছি কী আজ এই অবস্থা দেখবার জন্য?’
প্রসঙ্গত, এর আগে গত সোমবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র সাঈদ খোকনের তিনটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের (স্থগিত) নির্দেশ দেন আদালত। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত এই আদেশ দেন। একই সঙ্গে তার স্ত্রী ফারহানা আলম, বোন শাহানা হানিফ ও মা ফাতেমা হানিফের ব্যাংক হিসাবও স্থগিতের নির্দেশ দেন আদালত।
গত রোববার সাঈদ খোকনের তিনটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব, তার স্ত্রী ফারহানা আলমের দুটি, বোন শাহানা হানিফের দুটি এবং তার মা ফাতেমা হানিফের একটি ব্যাংক হিসাব স্থগিতের আবেদন করেন দুদকের উপপরিচালক জালাল উদ্দিন আহমেদ। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের মোট আটটি ব্যাংক হিসাব স্থগিতের আদেশ দেন। এর প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন সাঈদ খোকন।
আবেদনে বলা হয়, ওই ব্যাংক হিসাবগুলোতে বিপুল পরিমাণ অর্থ লেনদেন করা হয়েছে। অভিযোগটি সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনে ব্যাংক হিসাবগুলো থেকে যেন অর্থ উত্তোলন, স্থানান্তর বা হস্তান্তর করা না যায়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে ব্যাংক হিসাবগুলো জরুরি ভিত্তিতে স্থগিত করা প্রয়োজন।
আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তরা ওই ব্যাংক হিসাবের অর্থ স্থানান্তর করতে চেষ্টা করেছেন, যা তদন্তে উঠে এসেছে। অভিযোগ নিষ্পত্তি পর্যন্ত ওই অস্থাবর সম্পত্তি স্থানান্তর বা হস্তান্তর হয়ে গেলে রাষ্ট্রের ব্যাপক ক্ষতির কারণ হবে।