দ্বিতীয় দফায় রূপ পরিবর্তন করেছে করোনাভাইরাসের ‘ডেল্টা’ ধরন। মিউটিশনের মাধ্যমে এটি বর্তমানে ‘ডেল্টা প্লাস’ ধরনে রূপান্তরিত হয়েছে। নতুন এই ধরনটি একজন থেকে ১৩ জনের দেহে ছড়াতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. আহমেদ পারভেজ জাবীন বলেন, এ ধরনটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়লেও এখনো পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে নয়টি দেশে শনাক্ত হয়েছে। এটি ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের চেয়েও অধিক সংক্রমণশীল বলে প্রমাণিত। কারণ এটি একজনের দেহ থেকে ১৩ জনের দেহে ছড়িয়েই ক্ষ্যান্ত থাকে না, এর প্রভাবে প্রচলিত টিকাগুলোর অ্যান্টিবডি প্রক্রিয়া ভেঙে পড়ে। ফলে, টিকাগ্রহণ করা ব্যক্তিদের দেহে বড়ধরনের ইনফেকশন তৈরি করে। তাই এই ভাইরাস প্রতিরোধে সরকারের কঠোর অবস্থান নেওয়া দরকার।
এদিকে ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ‘ডেল্টা প্লাস’ আগের ধরনগুলের চেয়ে বেশিমাত্রায় ছড়ায়। এটি ফুসফুসের কোষের সঙ্গে সহজেই যুক্ত হয় এবং করোনা প্রতিরোধে ব্যবহৃত টিকার বিরুদ্ধে কাজ শুরু করে।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরও বলছে, এ বছরের এপ্রিলে ভারতে প্রথমবার ‘ডেল্টা প্লাস’ ধরন পাওয়া যায়। দেশটির তিনটি অঙ্গরাজ্যের ছয়টি জেলায় এর উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে। ভারত ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, চীনসহ নয়টি দেশে এই ‘ডেল্টা প্লাস’ ধরনের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাস সাধারণত সব সময়ই পরিবর্তিত হতে থাকে। অনেক ক্ষেত্রে এটি পরিবর্তিত হয়ে দুর্বল হয়ে যায়। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে পরিবর্তিত ভাইরাস পুরোনো ভাইরাসের চেয়ে শক্তিশালী ও বেশি সংক্রামক হয়ে দেখা দেয়। পরিবর্তিত রূপটি অন্য ধরনগুলোর তুলনায় মারাত্মক হয়ে থাকে।
‘ডেল্টা প্লাস’ ধরনকে এখনই ‘উদ্বেগের’ কারণ হিসাবে চিহ্নিত করছেন না বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, দুর্বল ইমিউনিটির মানুষ বা মহামারি শুরুর দিকে আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তিদের আবারও আক্রান্ত করার ক্ষেত্রে ‘ডেল্টা প্লাস’ হয়তো ডেল্টার চেয়ে কিছুটা বেশি কার্যকর। তবে বেশিরভাগ বিশেষজ্ঞই ‘ডেল্টা প্লাস’ -কে হালকাভাবে নেওয়ার পক্ষপাতী নন।