ঢাকাঃ দেশে দ্রততার সঙ্গে বাড়ছে করোনা শনাক্তের হার। দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যু মিছিল। এরই প্রেক্ষিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৪০টিই সংক্রমণের অতি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এক সপ্তাহের নমুনা পরীক্ষা ও রোগী শনাক্তের হার বিবেচনা করে এই ঝুঁকি চিহ্নিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
গত মঙ্গলবার বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। ১৪ থেকে ২০শে জুন এই এক সপ্তাহের নমুনা পরীক্ষা ও রোগী শনাক্তের হার বিবেচনা করে তিনটি মাত্রার ঝুঁকি (অতি উচ্চ, উচ্চ ও মধ্যম) চিহ্নিত করেছে সংস্থাটি। তাতে বলা হয়েছে, ৬৪টি জেলার মধ্যে ৪০টিই সংক্রমণের অতি উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। এর বাইরে আরও ১৫টি জেলা আছে সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকিতে। সংক্রমণের মধ্যম ঝুঁকিতে আছে ৮টি জেলা।
বান্দরবানে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা কম হওয়ায় সেটি বিবেচনায় আনা হয়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, খুলনা বিভাগের দশটি জেলার সব কটিই সংক্রমণের অতি উচ্চ ঝুঁকিতে আছে।
রাজশাহী বিভাগের আট জেলার মধ্যে ছয়টি অতি উচ্চ ঝুঁকিতে, দুটি আছে উচ্চ ঝুঁকিতে।
ঢাকা বিভাগের মধ্যে সাতটি জেলা আছে অতি উচ্চ ঝুঁকিতে। রাজধানীসহ দুটি জেলা আছে উচ্চ ঝুঁকিতে আর চারটি জেলা আছে মধ্যম ঝুঁকিতে।
রংপুর বিভাগের পাঁচটি অতি উচ্চ এবং তিনটি জেলা উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ।
চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে চট্টগ্রামসহ ছয়টি জেলা অতি উচ্চ, তিনটি জেলা উচ্চ এবং একটি জেলা মধ্যম ঝুঁকিপূর্ণ।
বরিশাল বিভাগে তিনটি জেলা অতি উচ্চ ঝুঁকিতে এবং মধ্যম ঝুঁকিতে তিনটি জেলা। সংক্রমণ এখনো তুলনামূলক কম সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে।
কয়েকটি জেলায় লকডাউন দেওয়া হলেও উত্তর ও দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে সংক্রমণ পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না; বরং তা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। এখন পরিস্থিতির বেশি অবনতি হয়েছে খুলনা বিভাগে। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৮৫ জনের মধ্যে ৩৬ জনই ছিলেন এই বিভাগের। এই বিভাগের খুলনা, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, সাতক্ষীরা, মেহেরপুরে রোগী বাড়ছে দ্রুত। রাজশাহী বিভাগের মধ্যে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, পাবনা, বগুড়ায়ও রোগী বাড়ছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, তিন দিন ধরে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে চার হাজারের ওপরে। এর মধ্যে গতকাল বুধবার অধিদপ্তর জানিয়েছে, ২৪ ঘণ্টায় নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৭২৭ জন, যা গত আড়াই মাসের মধ্যে এক দিনে সর্বোচ্চসংখ্যক শনাক্তের রেকর্ড। দুই মাসের বেশি সময় পর এদিন রোগী শনাক্তের হারও ২০ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনতে দেশের বিভিন্ন জেলায় লকডাউন চলছে। রাজধানী ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন রাখতে আশপাশের চার জেলাসহ সাত জেলায় লকডাউন দেয়া হয়েছে।