ঢাকা: রাজধানীর শাহজাহানপুরে গুলবাগে রুমমেট বান্ধবীকে ভিডিও কল দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছেন রুবিনা ইয়াসমিন নদী নামের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী। গতকাল বুধবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্রী রুবিনা বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলামের মেয়ে। তিনি শাহজাহানপুর মালিবাগের ৩৯১ গুলবাগে মারিয়ম নামের এক বান্ধবীর সঙ্গে পাঁচতলার একটি ফ্ল্যাটে সাবলেট থাকতেন। এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে রুবিনা ছিলেন বড়।
রুবিনা ও মারিয়ম আমজারা নামের একটি বোরকা কোম্পানিতে চাকরি করতেন। সাংবাদিকদের মরিয়ম বলেন, ‘রুবিনা ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে আইন বিভাগে পড়ত। সেখানে একই বিভাগের সায়েম নামের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে সম্পর্ক করে (রুবিনা) বিয়ে করেন ২০১৯ সালে সেপ্টেম্বর বা অক্টোবরে। বিয়ের তিন মাসের মাথায় ছেলের “চারিত্রিক” সমস্যার কারণে তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়।’
রুবিনার খালাতো বোন শরিফা সুলতানা বলেন, ‘বিচ্ছেদের পরও বিভিন্ন সময় রুবিনার বান্ধবী মারিয়মের ফোনে তাদের বিশেষ মুহুর্তের ছবি ভিডিও পাঠাত ওই ছেলে। সে (মারিয়ম) তা রুবিনাকে দেখাত। পরে তা ডিলিট করে দিয়েছিল। এসব নিয়ে সে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে থাকত।’ তিনি দাবি করেন, ‘ওই ছেলেটির এসবের কারণেই সে (রুবিনা) এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’
মারিয়ম বলেন, ‘সে (রুবিনা) গতকাল(বুধবার) কাজে যায়নি। আমি কাজে চলে যাই। বিকেল ৩টার সময় ফোন করে সে জানায়, আমার ভালো লাগছে না, তুই দ্রুত চলে আয়, আমি মরে যাব। পরে ভিডিও কলে সে দেখায় ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচাচ্ছিল। পরে দ্রুত চলে যাই; গিয়ে দেখে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ। ডাকাডাকি করে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে আশপাশের লোকজনের সহযোগিতায় ছিটকানি ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেই। সেখানে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মৃত বলে জানান।’
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।’ সবুজবাগ ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (এসি) মনতোষ বিশ্বাস বলেন, ‘ঘটনা শুনে এসেছি। প্রাথমিকভাবে শুনেছি সে আত্মহত্যা করেছে। প্রকৃতপক্ষে আত্মহত্যা না অন্য কিছু, তা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে।’