সিলেট: পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয়ের পরিচালকের স্ত্রীর বিরুদ্ধে কিশোরী গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে ফারাহানা আলম চৌধুরী নামে ওই নারীকে বুধবার বিকেলে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
পেশায় ব্যাংকার ফরাহানা আলম পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয়ের পরিচালক এমরান হোসেনের স্ত্রী। নগরীর শাহজালাল উপশহর এলাকার একটি বাসায় থাকেন তারা। ওই বাসা থেকেই বুধবার বিকেলে তাকে শাহপরান থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এর আগে বাসার বাথরুম থেকে উদ্ধার করা হয় নির্যাতিত কিশোরী রুনা আক্তারকে। পুলিশ জানায়, কিশোরী গৃহকর্মীকে বাথরুমে তালাবদ্ধ করে শরীরে মরিচের গুড়ো ছিটিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠেছে ফারহানা আলমের বিরুদ্ধে। থানায় এনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, উপশহরের ই-ব্লকের ২১ নম্বর বাসায় (ফিরোজা মঞ্জিল) পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক এমরান হোসেন সপরিবারে থাকেন। বুধবার সকাল থেকে ওই বাসার ভেতরে এক কিশোরীর কান্না শুনতে পান প্রতিবেশীরা। দুপুরে তারা পুলিশকে বিষয়টি জানান। পুলিশ গিয়ে গৃহকর্মী কিশোরীকে উদ্ধার করে।
কিশোরীর বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, মারধরের পর গৃহকর্মী রুনা আক্তারকে বাথরুমে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। নির্যাতনের সময় তার শরীরে মরিচের গুড়োও ছিটিয়ে দেওয়া হয়। পরে রুনা আক্তারকে উদ্ধারের পর বিকেলে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক এমরান হোসেনের স্ত্রী ফারাহানা আলমকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এ বিষয়ে কাউন্সিলর সালেহ আহমদ সেলিম বলেন, ‘খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। তবে পুলিশ ও আমাদের প্রথমে ঘরে ঢুকতে দেননি ফারহানা। এ সময় কয়েকজন মহিলা পুলিশ তাকে বুঝিয়ে ঘরে ঢোকেন এবং গৃহকর্মী কিশোরীকে বাইরে বের করে নিয়ে আসেন।’
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ‘পরিবশ অধিদপ্তরের পরিচালক এমরান হোসেনের স্ত্রী গৃহকর্মী রুনাকে প্রায় নির্যাতন করতেন। তবে বিষয়টি অস্বীকার করেছেন এমরান হোসেন ও তার স্ত্রী।’
ফারহানা আহমদ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত মাসের ২২ তারিখ ওই মেয়ে আমাদের বাসায় কাজের জন্য নিয়ে আসি। কিন্তু আসার পর থেকেই সে কিছুটা অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে এবং আমাদের বাসা থেকে চলে যাওয়ার বায়না ধরে। যার মাধ্যমে তাকে আমরা পেয়েছিলাম সেই ব্যক্তির কাছে আগামীকাল ওই মেয়েকে পৌঁছে দেওয়ার কথা। কিন্তু এরই মাঝে আজ সে আমার দুই সন্তানকে মারধর করে বাথরুমের ভেতর গিয়ে নিজেই সিটকিনি লাগিয়ে অহেতুক চিৎকার-চেচামেচি করে একটি বিব্রতকর পরিবেশ তৈরি করেছে।’
রুনার শরীরে মরিচের গুড়ো ছিটিয়ে দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে ফারহানা আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘এটি সে মাঝে মাঝে নিজে নিজেই করে। তাকে নাকি ভুত ধরে, এই ধারণা থেকে সে নিজেই এটি করে। তবে আমার সামনে করতে চাইলে তাতে আমি বাধা দেই।’
শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আনিসুর রহমান বলেন, ‘মেয়েটিকে আমরা উদ্ধার করেছি। এবং ওই বাসার গৃহকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে এসেছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।’