স্বাস্থ্যের নয়, অন্য খাতের টাকা গেছে কানাডায়’

Slider জাতীয়

স্বাস্থ্য খাতের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনকে মিথ্যা ও ভুল তথ্য বলে উল্লেখ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। টিআইবি’র সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতির অভিযোগ করাটা এখন অনেকেরই একটি ‘ফ্যাশনে’ পরিণত হয়েছে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে কোনো জায়গায় হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে বা দুর্নীতি হয়েছে এরকম কোনো তথ্য কেউ দেখাতে পারবে? বেসরকারি হাসপাতালের টেস্টিং জালিয়াতি, একজন ড্রাইভার বা নিম্নপদস্থ কর্মচারীর দুর্নীতি বা বিচ্ছিন্ন কোনো কর্মকর্তার মাধ্যমে অস্বচ্ছতার খবর ছাড়া কেউ স্বাস্থ্য খাতের বড় কোনো দুর্নীতি দেখাতে পারেনি। কেউ এমন তথ্য দিতে পারবে না বরং অন্য অনেক খাতের কোটি টাকা কানাডায় চলে গেছে।
আজ দুপুরে করোনাযুদ্ধে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. মাহমুদ মনোয়ারের ১ম মৃত্যুবার্ষিকীতে এক শোকসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, করোনা সংকটকালে দেশের স্বাস্থ্যখাত যখন বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত তখন টিআইবি দেশের স্বাস্থ্য খাতকে নিয়ে একটি অসত্য রিপোর্ট তুলে ধরেছে। টিআইবি’র রিপোর্টটি আগাগোড়াই ভুল তথ্য সংবলিত। এটা খুবই দুঃখজনক। বরং বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা বাংলাদেশের প্রশংসা করেছে।
তিনি বলেন, টিআইবি ঘরে বসে একটি সুন্দর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। আমরা করোনা শনাক্ত করতে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করিনি এমন মিথ্যা প্রতিবেদন দিয়েছে।

অথচ করোনা শনাক্তে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতে কোনো দুর্নীতির ঘটনা ঘটেনি।
তিনি আরও বলেন, টিআইবি বলছে রোগীদের জন্য আমরা কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা করিনি। অথচ সারা দেশে ১৫ হাজার বেডের ব্যবস্থা করা হয়েছে শুধুমাত্র করোনা চিকিৎসার জন্য। যে কারণে ভারতের মতো এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। এখনো অনেক দেশ যথাযথভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পারেনি। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো লকডাউন চলমান।
‘করোনার মধ্যে আইসিইউ বাড়াতে পারিনি’ টিআইবি’র এ তথ্য সঠিক নয় উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গত বছর যেখানে তিন থেকে চারশ’টি আইসিইউ ছিল, এখন সেখানে ১ হাজারের বেশি আইসিইউর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলছেন, আমাদের টিকা ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ছিল। সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে করোনায় সামনের সারির যোদ্ধাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেয়া হয়েছে। টিআইবি অনেক অভিযোগ করেছে যা মোটেও গ্রহণযোগ্য না।
বসুন্ধরার আইসোলেশন সেন্টার নিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ওটা চালু হলেও ছয় মাসে ছয়টা রোগী হয়েছে। এর পেছনে লাখ লাখ টাকা ভাড়া দেয়ার কারণে সবার সঙ্গে আলোচনা করে আইসোলেশন সেন্টার থেকে সরঞ্জাম বিভিন্ন হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, অধিদপ্তরের ড্রাইভার থেকে শুরু করে যারা অন্যায়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এমনকি ভুয়া রিপোর্ট দেয়ায় সাবরিনা এবং সাহেদদের গ্রেপ্তার করে আদালতে দেয়া হয়েছে। সনদ দেয়ার কারণে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

এর আগে গত মঙ্গলবার এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে করোনা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে সুশাসনে ঘাটতি থাকার কথা উল্লেখ করে টিআইবি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে উল্লেখ করা হয়, করোনা প্রতিরোধের কার্যক্রমে রোগ শনাক্তকরণ, চিকিৎসা, লকডাউন, টিকা ক্রয় ও বিতরণে স্বচ্ছতা, সুশাসন এবং প্রয়োজনীয় সমন্বয় ছিল না। একইসঙ্গে করোনা মোকাবিলায় আগামীর জন্য ১৯টি সুপারিশ তুলে ধরে আন্তর্জাতিক এ সংস্থাটি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *