কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি: নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা শতাধিক অনুসারী নিয়ে রোববার মিছিল করেছেন। এ সময় তাকে লাঠি হাতে নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা যায়।
রোববার সকাল সাড়ে ৮টায় মেয়র কাদের মির্জার নেতৃত্বে মিছিলটি শুরু হয়ে বসুরহাট বাজারের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু চত্বরে প্রতিবাদসভা করে।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তৃতা করেন কাদের মির্জা। তিনি এ সময় কোম্পানীগঞ্জ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) শামিম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিয়াউল হক মীর, সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) সুপ্রভাত চাকমা ও ওসি মীর জাহেদুল হক রনির প্রত্যাহার দাবি করেন। এ জন্য তিনি সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে ইঙ্গিত করে ২৪ ঘণ্টার সময়ও বেঁধে দেন। অন্যথায় পৌরসভা চত্বরে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করার হুমকি দেন।
কাদের মির্জা বলেন, ‘এখানে প্রশাসনের ছত্রছায়ায় ওরা (প্রতিপক্ষ) তাণ্ডব চালাচ্ছে। ডিসি-এসপির নির্দেশে টাকার জন্য স্থানীয় প্রশাসন তাদের সমর্থন দিচ্ছে। ওরা (প্রতিপক্ষরা) এখানে একরামের (নোয়াখালী-৪ আসনের এমপি) রাজত্ব কায়েম করতে চায়।’
তিনি বলেন, শনিবার রাতে আমার ছেলেদের মধ্যে অন্তত ১৫ জনকে গুলি করা হয়েছে। এর মধ্যে দুজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে। কিন্তু প্রশাসন একজন আসামিকেও গ্রেফতার করেনি। শুনেছি দুজনকে আটক করে ছেড়ে দিয়েছে।
বসুরহাট পৌরসভার মেয়র কাদের মির্জা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমার সঙ্গে আছেন। ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আমার দূরত্ব থাকলেও এখন নেই। তবু প্রশাসন আমার কথা শুনছে না। তারা আমার ছেলেদের ধরে এনে মারধর করলেও তাদের (রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ) কাউকে মারধর করা হয়নি।’
এ সময় তিনি মাইকে স্লোগান ধরেন, ‘ওসি রইন্যার (ওসি মীর জাহেদুল হক রনি) চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘শামিমের (এএসপি শামিম কবির) চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘ইউএনওর চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘ডিসির চামড়া তুলে নেব আমরা’, ‘এসপির চামড়া তুলে নেব আমরা’।
কাদের মির্জা এ সময় তার অনুসারীদের নিজ নিজ এলাকায় সংগঠিত হয়ে মিছিল-সমাবেশ করার নির্দেশ দেন। এতে কেউ বাধা দিলে তা প্রতিহত করারও নির্দেশ দেন।
এদিকে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সহিংসতায় আবারও উত্তেজনা বিরাজ করছে নোয়াখালীর বসুরহাটে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নির্বাচনী এলাকা কোম্পানীগঞ্জ। গত কয়েকমাস ধরেই এখানে দুপক্ষের মধ্যে কাঁদা ছোড়াছুড়ি চলছে।
ইতোমধ্যে সহিংসতায় স্থানীয় এক সাংবাদিকসহ দুজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। অর্ধশতাধিক মামলায় গ্রেফতারও হয়েছেন শতাধিক নেতাকর্মী।
সর্বশেষ গত শনিবার রাতে প্রতিপক্ষের হামলায় কাদের মির্জার ৯ অনুসারী গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এমতাবস্থায় বসুরহাটে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।