বন্দুকযুদ্ধে নিহত মানিকরাজধানীর পল্লবীতে প্রকাশ্যে সন্তানের সামনে শাহীন উদ্দিন (৩৩) নামে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা মামলার অন্যতম আসামি মো. মানিক র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে। আজ ভোরে মিরপুর রুপনগরের ইস্টার্ন হাউজিং এলাকায় র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মারা যায় সে। পল্লবী থানার ওসি কাজি ওয়াজেদ আলী গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শাহীনের কিলিং মিশনে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত মানিক অংশ নিয়েছিল বলে জানিয়েছে র্যাব।
উল্লেখ্য, গত ১৬ই মে পল্লবীতে নিজ সন্তানের সামনে সাহিনুদ্দীন নামে এক ব্যক্তিকে প্রকাশ্যে অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসী। ওই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। মামলায় ভিকটিমের পরিবারের পক্ষ থেকে ২০ জনকে নামীয় ও ১৪ থেকে ১৫ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। মামলাটি র্যাবের পক্ষ থেকে ছায়া তদন্ত শুরু হয় এবং গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়।
গতকাল এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, হত্যাকাণ্ডের ৪/৫ দিন আগে সাবেক সাংসদ আউয়ালের কলাবাগানের অফিসে বসে সন্ত্রাসী তাহের ও সুমনসহ আরো কয়েকজনের সঙ্গে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়নের জন্য সুমনকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
সুমনের নেতৃত্বে অন্তত ১০/১২ জন সক্রিয়ভাবে কিলিং মিশনে অংশগ্রহণ করে। এ ছাড়া আরো কয়েকজন যুক্ত ছিল। তিনি আরো জানান, হত্যার আগের দিন গত ১৫ই মে সুমন, বাবুসহ কিলিং মিশনে অংশগ্রহণকারী বেশ কয়েকজন ষড়যন্ত্র ও ছক করে। ১৬ই মে তারা পল্লবীর ঘটনাস্থলে একত্রিত হয়। সাহিনুদ্দীনকে তারা সমঝোতার কথা বলে ডেকে আনে। সাত বছরের ছেলে মাশরাফিকে নিয়ে মোটরসাইকেলে সেখানে যান সাহিনুদ্দীন। প্রথমে সুমন, মনির, মানিক, হাসান, ইকবাল ও মুরাদসহ ১০/১২ জন সাহিনুদ্দীনকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। শেষ পর্যায়ে মনির সাহিনুদ্দীনের মাথায় এবং মানিক পায়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে।
তিনি আরো জানান, নিহত সাহিনুদ্দীন ও সুমন গ্রুপের মধ্যে গত দুই মাসে একাধিকবার মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় পল্লবী থানায় ছয়টি মামলা হয়েছে। আলীনগর বুড়িরটেকে আউয়ালের একটি আবাসন প্রজেক্ট করেছে। সেখানে সাহিনুদ্দীনের পরিবারের জমি রয়েছে। সেই জমি দখল করে নিতে চেয়েছিলেন আউয়াল। এ জন্যই মূলত তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, এমএ আউয়াল নিজের আবাসন প্রকল্প পাহারার কাজে সন্ত্রাসী লালনপালন করেন। কিলার সুমনকে আউয়াল মাসে ১০/১২ হাজার টাকা দিতেন। হত্যাকাণ্ডে তাদের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। তবে এ কাজে কতো টাকা ব্যয় হয়েছে নির্দিষ্ট করে তা জানাতে পারেনি। তবে র্যাব নিহতের পরিবারের কাছ থেকে জানতে পেরেছে যে, ৩০ লাখ টাকা চুক্তিতে দুর্বৃত্তরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আউয়ালের ঘনিষ্ঠ টিটু ও তাহের জড়িত। হত্যাকাণ্ডের জন্য টিটুর মাধ্যমে সুমনের কাছে টাকা গেছে। টিটু, তাহেরসহ যারা এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের ধরতে অভিযান চলছে।