লন্ডনে বিমানের কেবিন ক্রু হোটেল সেন্ট জাইল্রে বাংলাদেশ বিমানের এক মহিলা কেবিন ক্রুর ওপর সিনিয়র দুই অফিসার যৌন নির্যাতন চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ২৫ ডিসেম্বর ক্রিসমাস নাইটে ঘটলেও মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে রাখা হয়েছিল। এমনকি এখনো এটি চেপে রাখার চেষ্টা চলছে। প্রাপ্ত অভিযোগ অনুযায়ী, ওই রাতে বাংলাদেশ বিমানের চিফ পার্সার নূরুজ্জামান রঞ্জু ও স্টুয়ার্ড অপুক মুমের সিনহা মহিলা কেবিন ক্রুর রুমে ঢুকে তার ওপর যৌন নির্যাতন চালান। এ বিষয়ে নির্যাতিত মহিলা ক্রু ঢাকায় ফিরে প্রশাসনিক অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। এরপর বিষয়টি তদন্তে বিমান এয়ারলাইনস ট্রেনিং সেন্টারের ডেপুটি চিফ ইনস্ট্রাক্টর মিসেস ডালিয়াকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে তিনি তদন্ত রিপোর্টে অভিযুক্ত চিফ পার্সার নূরুজ্জামান রঞ্জু ও স্টুয়ার্ড অপুক মুমের সিনহাকে নির্দোষ বলে উল্লেখ করেন। এ ব্যাপারে নির্যাতিত ক্রু চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি উল্লেখ করেন, মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে ঘটনা ধামাচাপা দিতেই ‘নির্দোষ রিপোর্ট’ দেওয়া হয়েছে। শেষ খবর অনুযায়ী, বর্তমানে বিষয়টি তদন্তে বিমানের হেড অফিস দায়িত্ব নিয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিমান ব্রিটেনের কান্ট্রি ম্যানেজার আতিকুল হক চিশতি জানিয়েছেন, ঘটনার ব্যাপারে হোটেল সেন্ট জাইল্রের কাছে ওইদিনের ভিডিও ফুটেজ চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি এখন বিমানের হেড অফিস দেখছে। অভিযোগে জানা গেছে, সরকারদলীয় এক মন্ত্রীর আত্মীয় হওয়ায় অভিযুক্ত চিফ পার্সার নূরুজ্জামান রঞ্জু ও স্টুয়ার্ড অপুক মুমের সিনহার বিরুদ্ধে এখনো শোকজ বা দায়িত্ব থেকে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়নি। এমনকি ঘটনার বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন তৎপরতা চালানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিমানের নারী কেবিন ক্রুদের কয়েকজন জানিয়েছেন, তারা এ অবস্থায় বিমানে কাজ করতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তা ছাড়া নির্যাতিত নারী কেবিন ক্রুকেও নানাভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। জানা গেছে, বিষয়গুলো বিমানমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সচিব খোরশেদ আলম চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব ও বিমান বোর্ড সদস্য আবুল কালাম আজাদ, বিমানের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) জামাল উদ্দিনসহ বিমানের বোর্ড সদস্যদের অবহিত করা হয়েছে।