ঢাকা: প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন ঘেরাও করতে শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ছাত্রদল।
বৃহস্পতিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দফতর সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটওয়ারী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক মো. আকরামুল হাসান এ আহ্বান জানান।
বিএনপির ছাত্রসংগঠনটির এ দুই শীর্ষ নেতা বলেন, জীবনে এমন কিছু অপ্রিয় কাজ আছে যা সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য করতে হয়। এখন দেশব্যাপী গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য যে আন্দোলন সংগ্রাম চলছে সেটি আমাদের প্রাণপিয় শিক্ষার্থীদের সুন্দর ভবিষ্যৎ গঠনের জন্যই। আজ যে আওয়ামী লীগ তোমাদের জন্য মায়া কান্না দেখাচ্ছে, ইতিহাস ঘাটলে দেখতে পাবে-তারা যখন বিরোধী দলে ছিল তখন ন্যায্য কোনো কারণ ছাড়াই পরীক্ষার সময় দিনের পর দিন হরতাল দিয়েছে। কিন্তু এখন তারা সেটি বেমালুম ভুলে গেছে। তার অর্থ হল আওয়ামী লীগ নিজ স্বার্থ চরিতার্থের জন্য যতটা সম্ভব নীচে নামতে পারে। তারা মিথ্যাবাদী ও প্রতারক।
ছাত্রদল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিবৃতিতে বলেন, যেখানে গণতন্ত্র অনুপস্থিত থাকে, সেখানে শিক্ষাজীবন পরবর্তী জীবন আরও দুর্বিষহ। আজ আওয়ামী লীগ- ছাত্রলীগ না করলে চাকরি হয় না। ব্যাংকসহ অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে লুটপাট করে তারা দেশের অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে।
তারা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, এই অবৈধ স্বৈরাচারী সরকারের যদি শিক্ষার্থীদের প্রতি ন্যূনতম মায়া থাকতো, তাহলে অনেক আগেই পদত্যাগ করে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতো। কিন্তু তারা ক্ষমতার মোহে এতটাই আচ্ছন্ন যে- ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য এখন তারা কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থীদের হত্যার উৎসবে মেতে উঠেছে।
রাজিব আহসান ও আকরামুল হাসান বলেন, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থী ও পরিক্ষার্থীদের উচিত গণভবন ঘেরাও করে অবৈধ প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগে বাধ্য করা।
ছাত্রদল নেতারা বিবৃতিতে আরও বলেন, আমরা ছাত্ররাজনীতি করি। শিক্ষার্থীরাই আমাদের কাছে সবচেয়ে অগ্রগণ্য। আমাদেরও ভাই-বোন ও আত্মীয়-স্বজনসহ অনেকেই পরীক্ষার্থী। আমরাও সঠিক সময়ে পরীক্ষা হওয়ার পক্ষে। কিন্তু এই সরকার যখন পরীক্ষার্থীদের হাতিয়ার বানিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন সংগ্রামকে নির্বাসনে পাঠিয়ে স্থায়ীভাবে একটি অবৈধ ও অগণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায় এবং সাধারণ মানুষের ভোটের অধিকারকে চিরদিনের জন্য কেড়ে নিতে চায়- তখন কি আর বসে থাকা যায়?
ছাত্রদল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক শিক্ষার্থী ও পরিক্ষার্থীদের সতর্ক করে বলেন, এই অবৈধ সরকার তোমাদের ক্ষমতায় থাকার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে। সে ব্যাপারে তোমাদের সদা সতর্ক থাকতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে অবগত হয়েছি এই অবৈধ সরকারের কিছু দুষ্কৃতিকারী অনেক স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের মানববন্ধনের নামে নিয়ে এসে দলের কর্মী বাহিনীর মতো ব্যবহার করছে। অনেক স্কুল-কলেজকে বাধ্য করা হচ্ছে তাদের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে এসে মানববন্ধনে যোগ দিতে।
ছাত্রদল নেতারা এমন ‘নীচ গর্হিত’ কাজের তীব্র নিন্দা জানিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে তাদের শিক্ষার পথ সুগম করতে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারকে পদত্যাগের আহ্বান জানান।
