লকডাউনে জরুরি প্রয়োজনে চলাচলের জন্য মুভমেন্ট পাস চালু করেছে পুলিশ। মুভমেন্ট পাসের অ্যাপসটি উদ্বোধনের পর থেকেই আবেদনের হিড়িক পড়ে। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত ৬ লাখ মানুষ অ্যাপটিতে আবেদন করেছেন। এরমধ্যে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পেরেছেন ৬০ হাজার মানুষ। এই সময় পর্যন্ত ৩০ হাজার পাস ইস্যু করা হয়েছে। এর আগে উদ্বোধনের প্রথম ঘণ্টায় ১ লাখ ২৫ হাজার মানুষ মুভমেন্ট পাসের জন্য আবেদন করেন। তারপর থেকে প্রতি ঘণ্টায় ১৫ হাজার মানুষ আবেদন করছিলেন। মুভমেন্ট পাসের আবেদনের চাপে এক পর্যায়ে সার্ভার জটিলতাও শুরু হয়।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠে, এত মানুষ যদি মুভমেন্ট পাস নিয়ে সড়কে নামে তাহলে লকডাউন বাস্তবায়ন হবে কীভাবে। সর্বাত্মক লকডাউনে যেখানে জরুরি সেবা ছাড়া সবকিছু বন্ধ রাখা হয়েছে সেখানে এত মানুষ মুভমেন্ট পাস নিয়ে কি করবে? অনেকেই সুনির্দিষ্ট কারণ দেখিয়ে মুভমেন্ট পাস নিয়ে বিনা প্রয়োজনে বাইরে বের হতে পারেন, এমন আশংকাও ছিল।
কিন্তু বাস্তবতা দেখা গেলো আরও ভয়াবহ। বুধবার বিকেলে সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ঘুরে দেখা যায় রাস্তায় চলাচলকারী অনেকের কাছেই নেই মুভমেন্ট পাস। ইত্তেফাক মোড়ের সামনেই গুলিস্তান এবং যাত্রাবাড়ি থেকে মতিঝিলগামী রাস্তায় বসানো হয়েছে পুলিশের চেকপোস্ট। সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা রিক্সা-মোটরসাইকেল-গাড়ি থামিয়ে সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। অনেকেই দেখাতে পারছেন না মুভমেন্ট পাস। এক মোটরসাইকেল চালক পাস না দেখাতে পারায় তার পথরোধ করে রাখে পুলিশ। পরবর্তীতে ঔষধ কিনতে যাচ্ছেন বলে অনুনয়-বিনয় করলে এক পর্যায়ে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেয়। ওই একই চেকপোস্টে আটকানো হয় রিক্সাযাত্রী এক নারীকে। তিনিও মুভমেন্ট পাস দেখাতে পারেন নি। ফকিরাপুলে জরুরি কাজে ব্যাংকে যাচ্ছেন বলে তিনি যাওয়ার অনুমতি পান।
মতিঝিলে এবং আরামবাগে অনেক পথচারীর কাছে মুভপেন্ট পাস আছে কিনা জানতে চাইলে কারো কাছেই সদুত্তর পাওয়া যায়নি। ফকিরাপুলে পথচারী মোহাম্মদ রফিকের সাথে কথা হয়। কেন ঘর থেকে বের হয়েছেন জানতে চাইলে তিনি উল্টো প্রশ্ন করেন, কতক্ষণ ঘরে থাকা যায়? মুভপেন্ট পাস আছে কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, তিনি এরকম কোন কিছুর নাম শুনেন নি।
তবে মতিঝিলে দুপুর থেকে দায়িত্বপালনকারী ট্র্যাকফিক পুলিশ সদস্য সুলতান বলেন, ‘লোকজন রাস্তাঘাটে প্রায় নেই বললেই চলে৷ মোটরসাইকেলেও একজনের বেশি যাত্রী চলাচল করছেন না।’ এত অল্পসংখ্যক মানুষের জন্য মুভমেন্ট পাস দেখার প্রয়োজন নেই বলেও মনে করেন তিনি।