নারায়ণগঞ্জ:চোখে ছিলো পানি, তবুও স্নিগ্ধ হাসি দিয়ে সহকর্মি ও উপজেলার সকলের কাছ থেকে বিদায় নিলেন ইউএনও নাহিদা বারিক।
মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা পরিষদে আয়োজিত ইউএনও’র বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেখা গেলো এমন হৃদয় বিদারক চিত্র। ইউএনও নাহিদা বারিকের এ বিদায় সংবার্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান।
বিদায়কালে নাহিদা বারিক বলেন, সরকারি চাকুরিজীবী হিসেবে বদলিজনিত কারণে কোনো জেলায় বা উপজেলায় স্থায়ী হওয়ার সুযোগ নেই প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের। উপজেলায় কর্মরত অবস্থায় সহকর্মী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের অনেক রকমের সহয়তা আমি পেয়েছি। কাজ আদায় করার জন্য হয়তো কারো বিরাগভাজন হয়েছি। অনেক সময় ইতিবাচক আবার কখনো নেতিবাচকভাবে মানুষকে উপস্থাপন করা হয়। খোলা চোখ দিয়ে সবকিছু দেখা যায় না। চোখের আড়ালেও অনেক কিছু থাকে। তবে নিজের অজান্তেও যদি কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকি, কারো প্রতি অন্যায় করে থাকি তাহলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
অতিথিদের বক্তব্য শেষে সহকর্মীরা বিভিন্ন উপহার দেন বিদায়ী ইউএনও’কে। তাদের বেশির ভাগের চোখেই ছিলো জল। অনুষ্ঠানস্থলে আবেগ থামাতে না পেরে কেঁদে ফেলেন বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম শওকত আলী। তৈরি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৭ মার্চ নারায়ণগঞ্জ সদর ইউএনও হিসেবে যোগদান করেন নাহিদা বারিক। এর আগেও তিনি এই জেলার বন্দর উপজেলা ও সদরের ফতুল্লা অঞ্চলের এসিল্যান্ড অর্থ্যাৎ সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
বলা যায়, কিন্তু তিনি কখনো সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করেননি। তিনি সকলকে নিজের আপন মানুষ ভেবে কাজ করেছেনে এবং সেটা সবার চোখেও পরেছে। দীর্ঘ এই সময়ে কেবল প্রশংসিত হয়েছেন তা নয়, কখনও সমালোচিতও হয়েছেন তিনি। তবুও মানবতার ক্ষেত্রে চুল পরিমান ঘাটতি রাখেননি মমতাময়ি এই ইউএনও। অনুষ্ঠানের শেষে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা ফুল দিয়ে বিদায় সংবর্ধনা জানান নাহিদা বারিককে।
সংবার্ধনা অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল আরেফিন, সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান মো. নাজিমউদ্দিন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা মনির, সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম রেজা মাসুম, উপজেলার ছয়টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য, প্রশাসনিক কর্মকর্তাবৃন্দ।