সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ডে খুন হওয়া ফল ব্যবসায়ী জয়নাল আবেদীনের স্ত্রী লিমার সঙ্গে প্রেম ও শারীরিক সম্পর্ক ছিল শাহাদাত হোসেন কাইয়ুমের। এ বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় স্ত্রী লিমাকে মারধর করেন স্বামী জয়নাল। এ ছাড়া সামাজিক বৈঠক করে কাইয়ুমের সঙ্গে স্ত্রীকে মেলামেশায় বাধা দেন তিনি। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে জয়নাল ও তার এক বন্ধু মিলে স্ত্রী লিমার সহযোগিতায় খুন করে জয়নালকে।
সোমবার বিকালে চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট হেলাল উদ্দিনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে এসব কথা জানায় মামলার প্রধান আসামি ও হত্যাকারী শাহাদাত হোসেন কাইয়ুম (২৭)। এ সময় সে হত্যার ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত বলে স্বীকার করে জানান, জয়নালের স্ত্রী লিমাকে তার খুবই ভালো লাগত। লিমাও তাকে পছন্দ করত। তাদের এ প্রেমের সম্পর্ক থেকে কয়েকবার শারীরিক সম্পর্কও হয়। কিন্তু সম্প্রতি লিমার স্বামী জয়নাল এ নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি শুরু করে। ঘটনার মাত্র দুই দিন আগে এলাকায় সামাজিক বৈঠকও ডাকেন তিনি। এতে লিমা আর কখনো কাইয়ুমের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে না বলে জানান। এসব কারণে তার মাথা ঠিক ছিল না। জয়নালের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে অপর এক সহযোগীকে নিয়ে জয়নালকে হত্যার পরিকল্পনা করে সে। সর্বশেষ শুক্রবার রাতে লিমার সহযোগিতায় ঘরে প্রবেশ করে জয়নালকে পেটে ছুরি মেরে ও লিঙ্গ কেটে হত্যা করে কাইয়ুম ও তার এক বন্ধু। শেষে রাতেই তার লাশ ফেলে দেওয়া হয় বাড়ির পাশের পুকুরে।
শনিবার সকালে প্রতিবেশীরা পুকুরে জয়নালের লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। পরে এ বিষয়ে জয়নালের ভাই বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় সুনির্দিষ্টভাবে কাইয়ুম ও লিমাকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পান সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন বণিক। তিনি তদন্ত শুরু করে কাইয়ুম ও লিমাকে গ্রেপ্তার করেন এবং তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারেন এ ঘটনায় কাইয়ুমের সহযোগিতায় ছিল আরো এক যুবক। গত রবিবার রাতে কাইয়ুমকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে তার অপর সহযোগীর এক স্বজনের বাড়ির সামনে লুকিয়ে রাখা অবস্থায় হত্যায় ব্যবহৃত ছুরিটি উদ্ধার করেন। সোমবার তাকে আদালতে নিয়ে গেলে সেখানে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে হত্যাকারী।
তার জবানবন্দির বর্ণনা দিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুমন বণিক বলেন, ফল ব্যবসায়ী জয়নাল হত্যা মামলার প্রধান দুই আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে এবং প্রধান আসামি কাইয়ুম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছে। এ ছাড়া তাকে নিয়ে হত্যার মূল আলামত অস্ত্রটি আমরা উদ্ধার করেছি। অন্য আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত।