মাদরাসা বন্ধের ষড়যন্ত্র তৌহিদী জনতা মেনে নেবে না: বাবুনগরী

Slider বাংলার মুখোমুখি


লকডাউনে সকল মাদরাসা খোলা রাখার দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। রোববার চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদরাসায় এ জরুরী সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় সভাটি শুরু হয়ে বিকাল ৪টায় শেষ হয়।

সভা শেষে হেফাজতের আমীর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, করোনার অজুহাতে দেশের ঐতিহ্যবাহী কওমী মাদরাসা বন্ধ করার ষড়যন্ত্র দেশের তৌহিদী জনতা মেনে নেবে না। করোনা মহামারী থেকে মুক্তির জন্য মহান আল্লাহর দরবারে কুরআনের তিলাওয়াত, যিকির, তাসবী পাঠ ও দুআ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। সুতরাং মহান আল্লাহর সাহায্য পাওয়ার লক্ষে কুরআন ও হাদীসের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো চালু রাখ সরকারেরেই নৈতিক কর্তব্য। তাই পবিত্র মাহে রমযানে হিফয খানা, নূরানী, মক্তব চালু রাখতে হবে। মসজিদে সুন্নাহ মুতাবেক নামায তারাবীহ, ইতিকাফ চলবে। লকডাউনের নামে শরীয়ত বিরোধী কোনো বিধি-নিষেধ আরোপ করা যাবে না।
যথা নিয়মে তাফসীর, দাওয়াত ও তালীমের কাজ চালু রাখতে হবে।

তিনি বলেন, বিগত ২৬ই মার্চ হেফাজতের কোনো কর্মসুচি ছিলো না। কিন্তু ঢাকা বায়তুল মোকাররম মসজিদে মুসল্লিদের উপর পরিকল্পিতভাবে পুলিশ ও সরকার দলীয় হেলমেট বাহিনী কর্তৃক আক্রমনের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্ষুদ্ধ জনতা মিছিল বের করে। হাটহাজারী ও বি-বাড়ীয়ায় মিছিল বের হলে পুলিশ বিনা উস্কানিতে গুলি করে পাঁচ জনকে শহিদ করে। এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে হেফাজতে ইসলাম ২৭ই মার্চ বিক্ষোভ ও ২৮ই মার্চ শান্তিপুর্ণ হরতালের কর্মসুচি ঘোষণা করে। কিন্তু হেফাজতের শান্তিপূর্ণ কর্মসুচিতে ২১ জনকে গুলি করে হত্যা করে পুলিশ ও সরকার দলীয় ক্যাডার বাহিনী।

বাবুনগরী বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, হেফাজত কোনো তা-ব চালায়নি, বরং ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও শ্রমিক লীগের সন্ত্রাসীদের দিয়ে গুপ্ত হামলার তা-ব চালিয়ে রাজনৈতিকভাবে এখন হেফাজতকে দোষারোপ করা হচ্ছে। সরকারের লোকজন এবং কতিপয় ইসলাম বিদ্বেষী মিডিয়া এখন আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি নিয়ে মিথ্যাচার করছেন। আমরা জানতে চাই, আমাদের শান্তিপূর্ণ হরতাল চলাকালীন কারা তা-ব চালিয়েছিল? কারা সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে, নিশ্চয়ই সেখানকার সিসি ক্যামেরাগুলোতে ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তির ব্যবস্থা করুন। কিন্তু নিরিহ আলেম, ওলামা, মাদরাসা ছাত্র ও তৌহিদী জনতাকে হয়রানী করবেন না। অবিলম্বে গণগ্রেফতার বন্ধ করুন। মিথ্যা ও হয়রানী মুলক মামলা প্রত্যাহার করুন। যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে অবিলম্ভে নিঃশর্তে মুক্তি দিন।

সভায় দেশের সকল মাদরাসা ও মসজিদে করোনা মহামারী থেকে মুক্তি ও সমকালীন সঙ্কট থেকে উত্তরনের জন্য কুনূতে নাযেলার আমল চালু করার জন্য আহ্বান জানানো হয়। সভায় যে কোনো সংকটকালীন সময়ে হেফাজতের সর্বস্তরে নেতাকর্মী, ওলামায়ে কেরাম ও ধর্মপ্রাণ তৌহিদী জনতাকে ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য আহ্বান জানানো হয়। এছাড়া আগামী ২৯শে মে হাটহাজারীতে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর মাওলানা হাফেজ তাজুল ইসলাম (পীর সাহেব ফিরোজশাহ), মাওলানা আব্দুল আওয়াল, মাওলানা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া, মাওলানা সালাহ উদ্দিন নানুপুরী, মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, মাওলানা শোআইব জমীরী, মাওলানা ওমর মেখলী, মাওলানা নাসির উদ্দিন মুনির, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মাওলানা জসিম উদ্দিন, মাওলানা মুনির হুসাইন কাসেমী, মুফতী সাখাওয়াত হুসাইন রাজী, মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, মাওলানা মীর মুহাম্মদ ইদরীস, মাওলানা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, ড. নূরুল আবসার আজহারী, মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন. মাওলানা ফয়সাল আহমদ, মাওলানা ইলিয়াস হামিদী , জনাব মুহাম্মদ আহসান উল্লাহ প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *