বরিশাল: গোপালগঞ্জে বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে এসে প্রেমিকা রওশন আরা মীম (২২) হত্যার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার সকালে গোপালগঞ্জ সদরের ফকিরকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত প্রেমিক ওই গ্রামের পরিবহন শ্রমিক বুলগান কাজী (২৪)। নিহত মীম বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার পয়সারহাট গ্রামের আব্দুস সালাম ফকিরের মেয়ে। মীমের স্বামী ওমান প্রবাসী জাহিদুল ইসলামের বাড়ি চট্টগ্রামে।
এই ঘটনায় গোপালগঞ্জ থানায় একটি ইউডি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এ ছাড়া ঘটনাস্থল বুলগানের বাড়ি থেকে মীমের ভ্যানেটি ব্যাগসহ কিছু আলামত উদ্ধার করেছে।
মীমের বাবার বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, নিহত মীম বিবাহিত। তার স্বামী জাহিদুল ইসলাম ওমান প্রবাসী। ১০ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়।
এই দম্পত্তির পাঁচ বছর বয়সী জামিলা নামের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। প্রতিমাসে জাহিদ স্ত্রীকে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা পাঠাতেন। এক বছর আগে মীম তার মেজবোন সোনিয়ার বাড়ি ফকিরকান্দি গ্রামে বেড়াতে যান। সেখানে অভিযুক্ত বুলগানের সঙ্গে মীমের পরিচয় হয়।
অভিযোগ উঠেছে, প্রথমে তাদের মধ্যে প্রেমের ও পরে বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বুলগান মীমকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তার স্বামীর পাঠানো টাকা আত্মসাৎ করে আসছিলেন।
পুলিশ জানায়, মীম ঢাকার ডেমরায় তার বড় বোনের বাড়িতে ছিলেন। বুলগান তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গোপালগঞ্জে আসতে বলেন। গত বৃহস্পতিবার মীম তার বোন ও ভাগ্নির স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা গোপনে নিয়ে বুলগানের বাড়িতে চলে আসেন।
বুলগান ও তার বাড়ির লোকজন মীমের কাছ থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নিয়ে মারপিট করেন। তাদের মারপিট ও নির্যাতনে মীমের মৃত্যু হয়।
মীমের বাবা বলেন, ‘আমার মেয়েকে হত্যা করে মুখে বিষ ঢেলে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়েছে। মীমের শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নাক-মুখ দিয়ে রক্ত ঝড়ছে। হাতে কাটা দাগ রয়েছে। লাশ দেখে হত্যা বলেই মনে হচ্ছে।’ তিনি এ হত্যার বিচার চান।
এদিকে, আজ অভিযুক্ত বুলগানের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তারা বাড়িঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়েছেন। এই কারণে বুলগান কিংবা তার পরিবারের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
গোপালগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) খয়বর আলী বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সেখান থেকে কিছু আলামত জব্দ করেছি।’
তিনি জানান, মীমের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়নি। তবে একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর হত্যার সঠিক কারণ জানা যাবে।