ঢাকায় পৌঁছেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করেন কেরি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ভারতের নয়াদিল্লি হয়ে ঢাকায় পৌঁছেছেন জন কেরি। মূলত আগামী ২২-২৩ এপ্রিল বাইডেন’স লিডারস সামিট অন ক্লাইমেটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সশরীরে আমন্ত্রণ জানানোর জন্যই জন কেরির ঢাকা সফর।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে মাত্র কয়েক ঘণ্টার সফরে ঢাকায় আসা জন কেরি বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করে আমন্ত্রণপত্র পৌঁছে দেবেন। এর আগে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনের সাথে বৈঠক করবেন বাইডেনের এই বিশেষ দূত।
বাইডেন প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ এ রাজনীতিকের সফর নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ঢাকাকে পাশে চায় ওয়াশিংটন। ঢাকাও এ ইস্যুতে ওয়াশিংটনের সাথে কাজ করতে আগ্রহী। এ মুহূর্তে জন কেরির সফর আগামী ২২-২৩ এপ্রিল বাইডেন’স লিডারস সামিট অন ক্লাইমেটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সশরীরে আমন্ত্রণ জানানোই মূল লক্ষ্য। তবে এ সুযোগে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ বৃদ্ধি, রোহিঙ্গা ইস্যু, জিএসপি সুবিধা পাওয়া কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পলাতক খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফিরিয়ে দেয়ার মতো বিষয়গুলো আলোচনার টেবিলে উত্থাপন করবে ঢাকা।
অন্যদিকে কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে (আইপিএস) ঢাকাকে পাশে চাইছে ওয়াশিংটন। জলবায়ু সম্মেলনের আমন্ত্রণের ফাঁকে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী কেরি আইপিএসে শেখ হাসিনা সরকারকে পাশে চাওয়ার বিষয়টিও আবার মনে করিয়ে দেবেন। সাথে প্রতিরক্ষা সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে অনেক দিন থেকে ঢাকাকে পাশে টানার বিষয়টিও তোলা হবে।
জন কেরির সফরে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘উনি ক্লাইমেটের জন্য আসছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে সামিটে আমন্ত্রণ জানাবেন, আমরা জয়েন করব। যেহেতু আমরা ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) চেয়ার, আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা ৪৮টি দেশকে রিপ্রেজেন্ট করি। জন কেরি এসে আমাদের সাথে আলাপ করবেন। এটা আমাদের জন্য সুযোগ। সম্মেলনে আমরা কোন বিষয়গুলো তুলে ধরব সেটা ওনার সাথে আলাপ করা যাবে। আমরা রোহিঙ্গা সমস্যার কথা অবশ্যই তুলব। সুখের সংবাদ হচ্ছে, আমি যখন যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়েছি জিএসপি উইথ-ড্র করার কথা তুলেছি, এবারও তুলব।’
গত ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্র সফর করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। সেই সফরে জন কেরির সাথে বৈঠক করেছেন তিনি। সেসময় ঢাকার সাথে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় কাজ করার আগ্রহের কথা জানায় ওয়াশিংটন।
এর আগে, গত ২৭ জানুয়ারি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন করেন জন কেরি। সেই ফোনালাপে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি বিষয়ে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র কীভাবে একযোগে কাজ কাজ করতে পারে, সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।