ওরে নীল দরিয়া
আমায় দেরে দে ছাড়িয়া।
বন্দী হইয়া মনোয়া পাখি, হায়রে
কান্দে রইয়া রইয়া
কাছের মানুষ দুরে থুইয়া,
মরি আমি ধড়-ফড়াইয়া,রে।
দারুন জ্বালা দিবানিশি।।
অন্তরে অন্তরে।
আমার এত সাধের মন বধূয়া
হায়রে কি জানি কি করে।
ওরে সাম্পানের নাইয়া,
আমায় দেরে দে ভিড়াইয়া।
বন্দী হইয়া মনোয়া পাখি, হায়রে
কান্দে রইয়া রইয়া।
ওরে সাম্পানের নাইয়া।
হইয়া আমি দেশান্তরী
দেশ-বিদেশে ভিড়াই তরী,রে।
নোঙর ফেলি ঘাটে ঘাটে।।
বন্দরে বন্দরে।
আমার মনের নোঙর পইড়া আছে হায়রে
সারেঙ বাড়ির ঘরে।
এই না পথ ধইরা
আমি কত না গেছি চইলা।
একলা ঘরে মন মন বধূয়া
আমার রইছে পন্থ চাইয়া।
ঢাকা: ওরে নীল দরিয়া আমায় দেরে দে ছাড়িয়া। জনপ্রিয় সারেং বউ ছবির এই জুটির জনপ্রিয় এই গানটিই যেন বাস্তব হতে চায়। এক সময়ের দেশ কাঁপানো জুটি চিত্রনায়ক ফারুক ও চিত্রনায়িকা কবরী। আজ জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। এই সেরা জুটি এখন আইসিইউতে। কবরী দেশে ও ফারুক বিদেশে চিকিৎসাধীন। দুই জনের অবস্থাই শংকটাপন্ন।
করোনায় আক্রান্ত সাবেক সংসদ সদস্য, চিত্রনায়িকা-নির্মাতা সারাহ বেগম কবরীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে বরেণ্য এই অভিনেত্রীকে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের আইসিইউতে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কবরীর ব্যক্তিগত সহকারী নূর উদ্দিন।
দুপুর সোয়া দুইটায় দৈনিক আমাদের আমাদের সময় অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘কুর্মিটোলায় আইসিইউ না পাওয়ায় ম্যাডামকে এখানে আনা হয়েছে। তার বেড প্রস্তুত করা হচ্ছে। ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা ভালো না। আপনারা সবাই ম্যাডামের জন্য দোয়া করবেন।’
এর আগে, গত ৫ এপ্রিল কবরীর নমুনা পরীক্ষায় করোনাভাইরাস রিপোর্ট পজিটিভ আসে। সোমবার তাকে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে গতকাল দিবাগত রাতের শেষ দিকে তার অবস্থার অবনতি হয়।
চিকিৎসকেরা জানান, দ্রুত তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু আজ সকাল পর্যন্ত হাসপাতালটিতে কবরীর জন্য আইসিইউ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না বলে অন্য হাসপাতালে নেওয়া হয় বরেণ্য এই অভিনেত্রীকে।
উল্লেখ্য, ১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের ‘সুতরাং’ ছবির মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু কবরীর। কাজ করেছেন ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘ময়নামতি’, ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ’, ‘পরিচয়’, ‘অধিকার’, ‘বেঈমান’, ‘অবাক পৃথিবী’, ‘সোনালী আকাশ’, ‘দীপ নেভে নাই’-এর মতো দর্শকপ্রিয় ছবিতে। ২০০৬ সালে তার পরিচালিত প্রথম ছবি ‘আয়না’ মুক্তি পায়। বর্তমানে তিনি নির্মাণ করছেন তার পরিচালিত দ্বিতীয় ছবি ‘এই তুমি সেই তুমি’।
এদিকে দুই সপ্তাহ ধরে সিঙ্গাপুরে হাসপাতালের আইসিইউতে রয়েছেন কিংবদন্তি অভিনেতা ও সংসদ সদস্য আকবর হোসেন পাঠান ফারুক। ২১ মার্চ থেকে কোনো সাড়া দিচ্ছিলেন না তিনি। ৬ এপ্রিল এ তথ্য জানিয়েছিলেন তার পুত্র রওশন হোসেন পাঠান শরৎ। কিন্তু গতকাল তিনি জানান, ডাক্তারদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন তার বাবা। শরৎ বলেন, ‘আব্বু ডাক্তারদের ডাকে সাড়া দিয়েছেন। একই সঙ্গে হাতও নাড়িয়েছেন। ডাক্তাররা আশাবাদী হয়েছেন। শারীরিক অবস্থাও উন্নতির দিকে। তবে পুরোপুরি সুস্থ হতে বেশ কিছুদিন সময় লাগবে।’ এর আগে সপরিবারে করোনায় আক্রান্ত হন ফারুক। সবাই সুস্থ হলেও তার বেশ কিছু শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে সিঙ্গাপুরে যান তিনি। ১৯৭১ সালে এইচ আকবর পরিচালিত ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে ফারুকের চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে। সবশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘ঢাকা-১৭’ আসন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।