ডিভোর্সের আগে জান্নাত আরা ঝর্ণার ঘরে ঢুকে তাকে মাওলানা মামুনুল হক কুপ্রস্তাব দিয়েছিলেন বলে জানান ঝর্ণার প্রথম পক্ষের ছেলে আব্দুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমার বাবা একবার বাসায় ছিলেন না, তখন আমি ছিলাম শুধু। আমি ঘুমাইছিলাম নাকি বাইরে ছিলাম, তখন আমার মা আমার ছোট ভাইকে দুগ্ধ পান করাচ্ছিলো। তখন উনি (মাওলানা মামুনুল হক) হুট করে আমার মায়ের রুমে ঢুকে একটা কুপ্রস্তাব দিয়েছিল।’
আজ সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও আপলোড করে এ কথা বলেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের স্ত্রী দাবি করা জান্নাত আরা ঝর্ণার প্রথম পক্ষের ছেলে আব্দুর রহমান।
ফেসবুকে মুহুর্তেই ভাইরাল হওয়া তিন মিনিটের সেই ভিডিওর শুরুতেই আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমি তো অলরেডি বড় হয়ে গেছি, অনেক কিছু শিখছি, জানছি, একটা ম্যাচুরিটির ভাব আইছে। আমি কিছুটা সহ্য করে নিতে পারি, কিন্তু আমার তো একটা ছোট ভাই আছে, তের-চৌদ্দ বছর বয়স। কেবল উঠতি বয়স। এই সময়ে মানুষের কতো কথা শোনা লাগতেছে। সমাজের সামনে আইসা মুখ দেখাইতে পারতেছি না।’
ছোট ভাইকে নিয়ে আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমার ছোট ভাইটাকে কোনোদিন আমি দেখি নাই রাত ৩ থেকে ৪টা পর্যন্ত জাইগা রইছে। কাল রাতে যখন এই ঘটনটা ঘটল, দেখি ওর চোখে কোনো ঘুমই নাই। ও বিষয়টা নিয়ে টোটালি মেন্টালি শকড হইছে। আমি বাসা থেকে বের হয়ে গেছি। আমি বাসায় থাকলে কি উল্টা-পাল্টা করব আমি নিজেও জানি না, এই কারণে বের হয়ে গেছি।’
নিজের বাবা সম্পর্কে আব্দুর রহমান বলেন, ‘আরও বলতে হয়, এটা আমি বলবো যে, আমার বাবার কর্মের ফল। আমার বাবা মানুষকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করে। পাগলের মতো ভালোবাসে। কিছুদিন আগে মোল্লারহাটে একটা মাহফিল পুলিশ তাকে (মামুনুল) করতে দেবে না। সে একটা জায়গায় লুকায়ে ছিল। আমার বাবা সেটা দেখে আইসা কিভাবে যে কাঁদছে। তার আগেই বিষয়টা আমি জানছি যে, আমার মায়ের সঙ্গে তার একটা সম্পর্ক ছিল। আমি তখন হাসতে ছিলাম যে, এই লোকটা যার জন্য অঝোর ধারায় কানতেছে আর ওই লোকটা (মাওলানা মামুনুল হক) এই লোকটার (বাবা শহীদুল ইসলাম) সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করতেছে। তারপরে যখন উনাকে জেলে নিল,মাওলানা মামুনুল হককে জেলে নিল, তখন আমার বাবা থানার ওসি কামরুজ্জামানকে বলে যে, আমাকে রেখে উনাকে ছেড়ে দেন। কতটা ভালোবাসলে একটা মানুষকে এই কথা বলতে পারে। আর সেই লোকটা এভাবে গাদ্দারি করল।’
ভিডিওর পরের অংশে মামুনুল হক নিজের মাকে কুপ্রস্তাব দিয়েও মামুনুল হক প্রত্যাখাত হয়েছে উল্লেখ করে আব্দুর রহমান বলেন, ‘কিন্তু আমার মা সেটা (কুপ্রস্তাব) প্রত্যাখান করেছিল। না এটা কোনোদিনই সম্ভব না। আপনি তো ঠকাচ্ছেন, আপনার কাছের বন্ধুকে, মানুষটাকে। সে তখন ফিরে এসেছিল। কিন্তু তার মনে তখনই কামভাব ঢুকে গেছে। সে লোভ সামলাইতে পারতেছিল না। সে একটা সুযোগে ছিল, কিন্তু এত তাড়াতাড়ি হয়ে যাবে সে এইটা বুঝতে পারে নাই।’
আব্দুর রহমান আরও বলেন, ‘(মামুনুল হক) যখনই সুযোগ পাইছে এনাদের মধ্যে ডিসট্যান্স বাড়াইয়া দিছে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে তো ঝগড়া হবেই। সে তখনই নক করছে। তখন দুই জনের মধ্যে আরও ডিসট্যান্স বাড়াইয়া দিছে। এইভাবে করে সে একটা পরিবারের খুশি, ভালোবাসা, একটা পরিবারের মধ্যে যে মিলমিশ সম্পর্ক পুরোপুরি সে ধ্বংস করে দিছে। আরও যে এভাবে কতো মানুষের, কতো পরিবারের ভালোবাসা যে ধ্বংস করে দিছে এর কোনো ঠিক নাই।
ভিডিওর শেষে দিকে আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমি বাংলাদেশের মানুষের কাছে আশা করব, এর যেন সঠিক বিচার হয়। আপনারা কারও অন্ধ ভক্ত হয়েন না। কাউকে অন্ধভাবে বিশ্বাস কইরেন না। কারণ সবারই আড়ালে আরেকটা চেহারা থাকে। এই লোকটা আলেম নামধারী মুখোশধারী একটা জানোয়ার। তার মধ্যে কোনো মনুষ্যত্ব নেই। সে সুযোগের অপেক্ষায় থাকে কাকে কিভাবে দুর্বল করা যায়। আমার আর কিছু বলার ভাষা নাই।’