সাংবিধানিক কোর্ট (সর্বোচ্চ আদালত) বন্ধ থাকতে পারে না। করোনায় আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সাংবিধানিক কোর্ট কখনো বন্ধ থাকেনি। লকডাউন দেয়া হলে আপিল বিভাগের কার্যক্রম চলবে কি-না গতকাল শুনানির সময় এক সিনিয়র আইনজীবী জানতে চাইলে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এমন মন্তব্য করেন।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী আদালতকে বলেন, আমাদের ফিফটি পার্সেন্টের বেশি ল’ইয়ারের কিন্তু বাসা থেকে শুনানি করার মতো লজিস্টিকস সাপোর্ট নাই। এগুলা বিবেচনা করে আর সরকারি কী করে তা দেখে সিদ্ধান্ত দেন মাইলর্ড। এক সপ্তাহের জন্য আপাতত। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনাদের যদি না থাকে সাংবিধানিক কোর্ট বন্ধ থাকতে পারে না। ইন্ডিয়াতেও বন্ধ রাখে নাই।
এখানে কোর্টে আসতে দিলে হাজার হাজার লোক আসবে। প্রবীর নিয়োগী বলেন, সাংবিধানিক ইস্যুতে আপনাদের তো ডিসিশন দিতেই হবে। যেটা আসবে কোর্টের সামনে সেটা তো দিতেই হবে। ইন্ডিয়ার সুপ্রিম কোর্ট একেবারে প্রথম থেকেই ওইটার (ভার্চ্যুয়াল) দ্বারা উনারা বজায় রেখেছেন। এমনকি হাইকোর্টও বজায় রেখেছেন।
গত বছর ২৩শে মার্চ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে প্রথমবার ‘সাধারণ ছুটি’ ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। শুরুতে ২৬শে মার্চ থেকে ৪ঠা এপ্রিল পর্যন্ত ‘ছুটি’ ঘোষণা হলেও পরে তার মেয়াদ বাড়ে কয়েক দফা। সে সময় সরকারের সাধারণ ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করে দেশের সব আদালতেও সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়। কার্যত বন্ধ হয়ে যায় দেশের বিচার ব্যবস্থা। পরে সুপ্রিম কোর্টের অনুরোধে মামলার বিচার, বিচারিক অনুসন্ধান, দরখাস্ত বা আপিল শুনানি, সাক্ষ্য বা যুক্তিতর্ক গ্রহণ, আদেশ বা রায় দিতে পক্ষদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে আদালতকে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষমতা দিয়ে গত বছর ৯ই মে অধ্যাদেশ জারি করা হয়। এরপর ১০ই মে সুপ্রিম কোর্ট ভিডিও কনফারেন্সসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ‘প্র্যাকটিস’ নির্দেশনা জারি করে। সে নির্দেশনা মতে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতসহ দেশের সব বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়। পরবর্তীতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি কমতে থাকলে প্রথমে কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শারীরিক উপস্থিতিতে নিম্ন আদালত চালু করা হয়। একপর্যায়ে শারীরিক উপস্থিতির মাধ্যমে হাইকোর্টেও চালু করা হয় কয়েকটি বেঞ্চ। পাশাপাশি ভার্চ্যুয়াল কোর্টও চালু থাকে। কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ আদালত অর্থাৎ আপিল বিভাগের দু’টি বেঞ্চ এবং চেম্বার আদালত এখন পর্যন্ত ভার্চ্যুয়ালিই চলছে।