কুমিল্লার দেবিদ্বারে একটি বিয়ে বাড়িতে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে নাচ ও গানকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে ২ যুবক নিহত হয়েছেন এবং গুরুতর আহত হয়েছেন তিনজন। বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে জেলার দেবিদ্বার উপজেলার জীবনপুর ইনসাফ মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হচ্ছেন উপজেলার আব্দুল্লাহপুর (জীবনপুর) গ্রামের হাবিবুর রহমান মিয়ার ছেলে সাইফুল ইসলাম (১৮) ও মুরাদনগর উপজেলার গুঞ্জুর মধ্যপাড়া গ্রামের আবু হানিফের ছেলে রাহিম (২০)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আরিফুর রহমান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দেবিদ্বার উপজেলার আব্দুল্লাহপুর গ্রামের ওমান প্রবাসী জাকির হোসেনের মেয়ে নাজমা আক্তারের সাথে একই উপজেলার বুড়িরপাড় গ্রামের প্রবাসী হোসাইন মিয়ার ৮/৯ মাস আগে বিয়ে সম্পন্ন হয়। ওই বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল বৃহস্পতিবার। তাই বুধবার সন্ধ্যা থেকে কনের পিত্রালয়ে নাচ ও গান-বাজনার আয়োজন চলছিল। রাতে সেখানে নাচতে যায় পাশের মুরাদনগর উপজেলার গুঞ্জুর গ্রামের রাহিম, সজিব, মামুন ও আক্তারসহ আরো কয়েকজন। এ নিয়ে স্থানীয় যুবকদের সাথে তাদের বাকতিবণ্ডা হয়।
এ নিয়ে বিরোধের জের ধরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিয়ে বাড়ির অদূরে আব্দুল্লাহপুরস্থ জীবনপুর ইনসাফ মার্কেটের সামনে স্থানীয় যুবকদের সাথে গুঞ্জুর গ্রাম থেকে যাওয়া যুবকদের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০/১৫ জন আহত হন। এদের মধ্যে সাইফুল ও তার বন্ধু রাহিম মারা যান। আহতদের মধ্যে সজিব, মামুন, আক্তার হোসেনকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর ভোর রাতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের ঢামেকে পাঠানো হয়।
কনের মা সেলিনা আক্তার জানান, রাতে আমাদের গ্রামের অনেক ছেলে ছাড়াও আশপাশের গ্রামের অনেক ছেলে আমাদের বাড়িতে আসে, আমরা অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তাদের মধ্যে কি নিয়ে ঘটনা ঘটেছে জানতে পারিনি। পরে লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারি বাড়ির পাশে মার্কেটের সামনে মারামারি হয়েছে।
নিহত রাহিমের বাবা আবু হানিফ জানান, পাশের গ্রাম জীবনপুরে আমার ছেলের বন্ধু সাইফুল ইসলামের সাথে রাতে বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে গিয়ে খুন হয়েছে। কে বা কারা হত্যা করছে তা জানি না রাতে খবর পেয়ে থানা পুলিশের মাধ্যমে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে দেবিদ্বার থানায় আনা হয়। আমার ছেলে হত্যায় প্রকৃত আসামিদের গ্রেফতারপূর্বক বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আরিফুর রহমান জানান, খবর পেয়ে গভীর রাতে যখন ঘটনাস্থলে যাই তখন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিয়ে বাড়িতে নাচ-গান করতে এসে স্থানীয় যুবকদের সাথে পাশের গ্রামের ছেলেদের কি অবস্থার প্রেক্ষিতে হতাহতের ঘটনা ঘটছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় কনের বাবা জাকির হোসেন ও একই এলাকার বাছির মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ঘটনার বিস্তারিত কারণ এখনো জানতে পারিনি। দুজনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। তদন্ত সাপেক্ষে মামলা দায়ের করা হবে।