হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে সাংবাদিকদের ওপর হামলা। গত কয়েকদিনে খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে দফায় দফায় হামলার শিকার হয়েছেন সাংবাদিকরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বৃহস্পতিবারও হামলার শিকার হন সাংবাদিকরা। গতকাল বায়তুল মোকাররম এলাকায় হামলা হয় সাংবাদিকদের ওপর।
এতে একাত্তর টিভির সংবাদকর্মী ইশতিয়াক ইমন, ডেইলি স্টারের সাংবাদিক আরমান হোসেন ও প্রবীর দাস, ডিবিসির ক্যামেরাপারসন পারভেজ আহমেদ, বাংলানিউজের রিপোর্টার মিরাজ হোসেন ইফতি ও প্রথম আলোর ফটোগ্রাফার হাসান রাজা, ইউএনবি’র জাহাঙ্গীর আলম, বাংলাভিশনের রিপন দেওয়ানসহ ১২-১৩ জন আহত হন।
আহত সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হামলা ও বিক্ষোভের সময় অনেক নেতাকর্মীরা বেপরোয়া হয়ে থাকেন। অনেক সময় তাদের হাতে অস্ত্রসহ ও হামলার সরঞ্জাম থাকে। সংবাদকর্মীরা তাদের ছবি ও ভিডিও যেন সংগ্রহ না করতে পারে, তার জন্য তাদের ওপর হামলা করা হয়। শারীরিকভাবে লাঞ্ছনাসহ মোবাইল ও ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়।
এমনকি প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পৃথক দুই জায়গায় পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন প্রথম আলোর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আসিফ হিমাদ্রী ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলা ট্রিবিউনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি আবিদ হাসান রাসেল। হামলার কারণ হিসেবে জানা যায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার ‘বাংলাদেশের জনগণ’ নামে একটি প্ল্যাটফরম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ‘জেয়াফত’ নামে একটি কর্মসূচি দেয়। কিন্তু কর্মসূচি শুরু হওয়ার আগেই ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের মারধর করে তাদের ব্যানার ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ সময় বাংলা ট্রিবিউনের আবিদ হাসান রাসেল এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করলে তাকে মারধর করে আইডি কার্ড ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। একই দিন সন্ধ্যায় মোদিবিরোধী মশাল মিছিল করে বাম ছাত্রসংগঠনগুলো। মিছিলটি টিএসসি থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে রোকেয়া হলের সামনে সমাবেশ করে। পরে তারা ভিসি চত্বর দিয়ে চলে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগ কর্মীরা তাদের ওপর হামলা করে। এ সময় প্রথম আলোর সাংবাদিক আসিফ হিমাদ্রীকেও মারধর করা হয়। পরে আহত অবস্থায় সেখান থেকে উদ্ধার করে তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ আগমনের প্রতিবাদে আয়োজিত কর্মসূচিতে হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। গত মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতিশীল ছাত্রজোট কর্তৃক আয়োজিত কর্মসূচিতে ছাত্রলীগের কর্মীরা বাঁশ, লাঠি ও হেলমেট দিয়ে হামলা চালায়। এ সময় হামলার শিকার হন মানবজমিনের ফটো সাংবাদিক জীবন আহমেদ, দেশ রূপান্তরের ফটো সাংবাদিক রুবেল রশিদ, জুমা প্রেসের কাজী সালাহউদ্দিন, ইউএনবি’র জাবেদ হাসান চৌধুরী, ফ্রিল্যান্সার সাংবাদিক হিমুসহ জোটের অন্তত ১৫ জন।