দিনাজপুরঃ খনিজ সম্পদের ভান্ডার দিনাজপুরে সন্ধান মিলেছে আরও একটি নতুন লোহার খনির। এ খনির অবস্থান নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর (জিএসবি)। ইতোমধ্যে খনির সম্ভাব্যতা ও যাচাই কার্যক্রম শুরু করেছেন জিএসবি’র কর্মকর্তারা।
খনির সন্ধান পাওয়া গেছে, দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার ১০নং পুনট্টি ইউনিয়নের কেশবপুর মৌজায়। এই নতুন খনির খোঁজ পাওয়ার পর সম্পদের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে নেমেছেন জিএসবি কর্মকর্তারা। চিরিরবন্দর উপজেলার ১০নং পুনট্টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর-এ-কামাল জানান, বাংলাদেশ ভূ-তাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতর (ভূতত্ত্ব)-এর পরিচালক আবদুল আজিজ পাটোয়ারী স্বাক্ষরিত জেলা প্রশাসককে দেওয়া একটি চিঠির অনুলিপি পেয়েছেন। এর আগে ২০০১ সালে পার্শ্ববর্তী উপজেলার পার্বতীপুরের আমবাড়ীতে তামার খনি পাওয়ার আশায় কূপ খনন করা হয়েছিল। সর্বশেষ হাকিমপুরের ইসবপুরে লোহার খনির পর এবার চিরিরবন্দর উপজেলার কেশবপুর মৌজায় নতুন খনির খোঁজ পেলো জিএসবি।
সরেজমিনে জানা গেছে, ভূগর্ভের অভ্যন্তরে সম্পদের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্যে কূপ খনন শুরু করেছে দপ্তরের একটি অনুসন্ধানী দল। প্রথম তিন মাস কূপ খনন করে চালানো হবে খনিজ সম্পদের অনুসন্ধান কাজ।
তার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। নতুন খনিতে লোহার কাঁচামাল আকরের পুরুত্ব অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তাই লোহার সাথে তামাসহ অন্যান্য মূল্যবান সম্পদ পাওয়ার আশাও করছেন তারা। কেশবপুর থেকে প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ নিয়ে আসা হচ্ছে। সংরক্ষিত এলাকা হিসেবেও বিলবোর্ড লাগানো হয়েছে। এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে কূপ খনন কাজ উদ্বোধনের আশা করছেন জিএসবি।
চিঠিতে কেশবপুর এলাকায় জিডিএইচ-৭৬/২১ কূপ খনন কার্যক্রমে বহিরাঙ্গনে অবস্থানকালীন সময়ে কর্মকর্তাদের আনুসাঙ্গিক সহায়তা, নিরাপত্তা, তথ্য ও উপাত্ত সরবরাহ, যাতায়াত, পথ প্রদর্শন প্রদানে সহযোগিতা করার অনুরোধ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার, চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও চিরিরবন্দর থানাকে এ সংক্রান্ত চিঠি দেয়া হয়েছে। এরইমধ্যে খনন কার্যক্রম সহ যাতায়াতের কাজে সহযোগিতার জন্যে দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক, চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের চিঠি দিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদফতরের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন শাখা।
শাখার পরিচালক (ভূতত্ত্ব) মোহাম্মদ আবদুল আজিজ পাটোয়ারী স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, জিএসবির নি¤œবর্ণিত ২০২০-২১ অর্থবছরে রাজস্ব খাতে দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর উপজেলার ১০নং পুনট্টি ইউনিয়নের কেশকবপুর এলাকায় জিডিএইচ ৭৬/২১ কূপ খনন কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উক্ত এলাকায় ৪ মাসে দিনাজপুর জেলায় ৫ জন কর্মকর্তা ভ্রমণ ও অবস্থান করবেন। এ সময়ে কর্মকর্তাদের আনুষঙ্গিক সহায়তা (নিরাপত্তা, তথ্য ও উপাত্ত সরবরাহ, যাতায়াত, পথ প্রদর্শন ইত্যাদি) প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো হলো।’
চিঠিতে উল্লেখিত কূপ খনন কাজে দল-প্রধান হিসাবে রয়েছেন উপ-পরিচালক (ড্রিলিং প্রকৌশলী) মাসুদ রানা। তার সঙ্গে রয়েছেন উপ-পরিচালক (ড্রিলিং প্রকৌশলী) নিহাজুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক (ড্রিলিং প্রকৌশলী) নাজমুল হোসেন খান, সহকারী পরিচালক (ড্রিলিং প্রকৌশলী) মঞ্জুর আহমেদ এলাহী ও সহকারী পরিচালক (ড্রিলিং প্রকৌশলী) রোকনুজ্জামান।
চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়েশা সিদ্দিকা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মন্ত্রণালয় থেকে আমাকে একটি চিঠি দিয়েছে, সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে খনন কার্যক্রম করার জন্য আমি অনুমতি দিয়েছি।’