যে কোনো খাবার দাবার স্টিল, মেলামাইন বা কাচের প্লেটেই খাওয়া অভ্যাস আমাদের। কিন্তু এর বাইরে কলাপাতায়ও খাবার খাওয়া যায়। এটি কিন্তু মানুষের খাদ্যাভ্যাসের পুরোনো রীতি। দারুণ ব্যাপার হচ্ছে, কলাপাতায় খেলে অনেক রোগ থেকে রেহাই পাওয়া যায়। জি নিউজের এক প্রতিবেদনে বিষয়টি ওঠে এসেছে।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন,কলাপাতার রসে রয়েছে প্রচুর গুণ। আর সেই রস খাবারের সঙ্গে মিশলে ভরপুর পুষ্টি পৌঁছাবে আপনার দেহে। তার জন্য করতে হবে না কোনও অতিরিক্ত পরিশ্রমও।
কলাপাতার রসে রয়েছে সাইট্রিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি ও ট্যানিন। টনিকের মতো কাজ করে এই রস। যদিও কলাপাতার রস করে খাওয়ার কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই। শুধু ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ বা ডিনার কলাপাতায় খেলেই চলবে।
কলাপাতায় খেলে পেটে রোগ, এবং সেখান থকে জ্বর সর্দি, পায়খানার সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে। আপনার ধারেকাছে ঘেঁষবে না রোগ। দক্ষিণ ভারতে এখনও প্রচলিত রয়েছে কলা পাতায় খাওয়া।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, ব্রঙ্কাইটিসে আশ্চর্য উপকার। কোষ্ঠকাঠিন্য, আমাশা, রক্তাল্পতা, চর্মরোগে কলাপাতার রস ম্যাজিকের মতো কাজ করে। লিভারের সমস্যা সারায়। ব্লাড প্রেশার কমায়।
স্বাস্থ্যকর কলাপাতায় রয়েছে পলিফেনল। প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। কলাপাতায় খেলে খাবারের সঙ্গে পলিফেনল মিশে পুষ্টি জোগায়। কলাপাতার গায়ে মোমের মতো একটা আবরণ থাকে। চমৎকার একটা ফ্লেভার থাকে। খাবারের সঙ্গে মিশে খাবারকে আরও টেস্টি করে তোলে। ইকো-ফ্রেন্ডলি প্লাস্টিক বা কাগজের প্লেটের চেয়ে কলাপাতা অনেক বেশি ইকো-ফ্রেন্ডলি। ব্যবহারের পর খুব অল্প সময়ে নষ্ট হয়ে যায়।
স্বাস্থ্যসম্মত খাওয়ার আগে কলাপাতা খুব বেশি ধোয়ার প্রয়োজন নেই। অল্প একটু পানি দিয়ে ধুয়ে নিলেই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। স্টিলের থালা হোক বা কাচের প্লেট, পানি-সাবান দিয়ে ধুতে হয়। খুব ভালো করে ধুলেও সাবানের রাসায়নিক প্লেটে লেগে থাকতে পারে। কিন্তু কলাপাতায় এসবের প্রয়োজন নেই। তাই খাবারও থাকে রাসায়নিকমুক্ত।
খাওয়ার সময় অনেক কিছু একসঙ্গে কলাপাতায় নেওয়া যায়। মোমের মতো আবরণ থাকায় এটি ওয়াটারপ্রুফও। তাই ঝালে-ঝোলে আরাম করে খাওয়া যায়।
তবে অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে, ইট পাথরের শহরে কলাপাতা কোথায় মিলবে? এরপরেও অনেকের সুযোগ থাকে, এ ছাড়া মফস্বল আর গ্রামে তো কলাপাতা মেলেই। প্রতিদিন না হলেও মাঝেমধ্যে বা সপ্তাহে এক দুই দিন কলাপাতায় খাওয়াদাওয়া অভ্যাস করতে পারেন।