কৃষক দলের নেতৃত্বে ফের থাকছেন শামসুজ্জামান দুদু ও হাসান জাফির তুহিন। সংগঠনটির সারাদেশের কাউন্সিলররা সদ্য বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে আগামীতে সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে রাখার পক্ষে মতামত দিয়েছেন বলে জানা গেছে। শুক্রবার সকালে রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের চতুর্থ জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হয়। পরে বিকেল তিনটায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে হয় সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বের কাউন্সিল অধিবেশন। সেখানে ৭৯টি সাংগঠনিক জেলার ৩৯৫ জন এবং কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটির ১৫৩ জন প্রতিনিধি অংশ নেন। সেখানে কাউন্সিলররা দলের কার্যক্রম এবং আগামীর নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়ে বক্তব্য রাখেন।
গুলশানস্থ বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে হওয়া বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সারাদেশ থেকে আসা কৃষকদলের কাউন্সিলরা দলের সর্বশেষ কার্যক্রম নিয়ে বক্তব্য রাখেন। এসময় কৃষক দলের পূর্ণাঙ্গ কমিটির নেতা নির্বাচনের বিষয়েও তারা তাদের মতামত দেন। এর মধ্যে বেশির ভাগ কাউন্সিলর বর্তমান কমিটির আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু ও সদস্য সচিব হাসান জাফির তুহিনকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে রাখার পক্ষে মতামত দেন।
কাউন্সিলরদের বক্তব্যের শেষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বক্তব্য রাখেন। এদিকে কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে আগামী দুই তিন দিনের মধ্যেই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে কৃষক দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে।
বৈঠক সূত্রে আরও জানা যায়, অধিবেশনে অংশ নেয়া কয়েকজন কাউন্সিলর বিএনপির দুই ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ও আব্দুস সালামকে নেতৃত্বে নিয়ে আসার বিষয়েও মতামত দিয়েছেন।
শুক্রবার সকালে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের বক্তব্যের সমাপ্তিতে সংগঠনের বিধান অনুযায়ী নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের পূর্বাহ্নে কৃষক দলের ১৫৩ সদস্যের আহবায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
উল্লেখ্য, বিএনপি প্রতিষ্ঠার পর ১৯৮০ সালের ১১ ডিসেম্বর জাতীয়তাবাদী কৃষক দল প্রতিষ্ঠা করেন জিয়াউর রহমান। সে সময় অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আব্দুস সাত্তারের নেতৃত্বে আহ্বায়ক কমিটি করা হয়। এরপর ১৯৯২ সালে আবদুল মান্নান ভূঁইয়াকে সভাপতি করে কৃষক দলের প্রথম কমিটি গঠন করা হয়। সাধারণ সম্পাদক করা হয় শামসুজ্জামান দুদুকে।
১৯৯৮ সালে মাহবুব আলম তারাকে সভাপতি ও দুদুকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি হয়। এরপর ২০০১ সালে মাহবুব আলম তারা কৃষক দল ছেড়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিলে মজিবুর রহমান মোল্লা ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হন।
২০০৭ সালে তার মৃত্যুর পর সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে আসেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ মির্জা ফখরুল বিএনপি মহাসচিব হওয়ার পর কৃষক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব ছাড়েন।
দীর্ঘদিন পর নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনে ২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি শামসুজ্জামান দুদু ও হাসান জাফির তুহিনের নেতৃত্বে ১৫৩ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।