এদেশে টেলিভিশন চ্যানেলের ইতিহাসের শুরুটা হয়েছিল বাংলাদেশ টেলিভিশন বা বিটিভির মাধ্যমে। তাও সেই ১৯৬৪ সালের ঘটনা। দেশে এখন বেসরকারি ২১টি টিভি চ্যানেল তাদের সম্প্রচার কার্যক্রম চালাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে কিছু সংবাদ ভিত্তিক টিভি চ্যানেল। আর বাকিগুলো পাঁচ মিশালি টিভি। মানে এসব টিভিতে সংবাদ খেলাধুলা থেকে শুরু করে রকমারি অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকে। এর মধ্যে আবার শুধু সংগীত ভিত্তিক চ্যানেল রয়েছে একটি। এসব মোটামুটি সবারই জানা।
href=’http://ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/ck.php?n=aaf8b641&cb=INSERT_RANDOM_NUMBER_HERE’
target=’_blank’><img
src=’http://ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/avw.php?zoneid=530&cb=INSERT_RANDOM_NUMBER_HERE&n=aaf8b641′
border=’0′ alt=”/></a>
সচেতন পাঠকরা এটাও জানেন যে, দেশে আরো নতুন ১১টি চ্যানেল তাদের সম্প্রচার কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে বিষয়ভিক্তিক বেশ কিছু টিভি চ্যানেল। নতুন এই চ্যানেলগুলো হলো, দীপ্তবাংলা, বাংলা টিভি লিমিটেড, চ্যানেল ২১, রেনেসাঁ টিভি, ঢাকা বাংলা টেলিভিশন, এটিভি, নিউজ টোয়েন্টিফোর, আমার গান, নিউ ভিশন টেলিভিশন, রংধনু টিভি এবং যাদু টিভি।
আগে ছিলো ২১ এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে আরো ১১টি। তাহলে হিসাবটা এমন দাঁড়ায় যে সরকারি এবং বেসরকারি সব মিলিয়ে দেশে টিভি চ্যানেলের সংখ্যা হচ্ছে ৩৪। বাহ! পুরো পাশ মার্ক! তাহলে তো কোনো চিন্তা নেই। চিন্তা যদি নাই থাকতো তাহলে তো কথাই ছিল না। এতগুলো নতুন চ্যানেল আসছে। আমরা কি প্রস্তুত? এ প্রশ্নটা এখন সবার মনে। অনেকের মতে দেশে এতো চ্যানেলের প্রয়োজন আছে কিনা? সে প্রশ্নও থেকে যায়।
সবসময় একটা কথা বলতে শোনা যায় এদেশে দক্ষ টেকনেশিয়ান নেই, রয়েছে শিল্পী সংকট, নাট্যকার আর নির্মাতার সংকট, অভাব রয়েছে বড় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের। যদিও নিউজ চ্যানেলগুলোর জন্য এত কিছু ভাবতে হবে না, যতটা ভাবতে হবে অনুষ্ঠান ভিক্তিক চ্যানেলগুলোর। অনেকেই বলতে পারেন নতুন শিল্পী, নতুন নির্মাতাদের দিয়ে অনুষ্ঠান নির্মাণ করা হবে, এতে অনুষ্ঠান নির্মাণ ব্যয় যেমন কম হবে তেমনি নতুন শিল্পী তৈরি হবে। কিন্তু যতটুকু জানি এই কায়দায় কাজ করতে গিয়ে প্রচারের অপেক্ষমান দীপ্তবাংলা ধরা খেতে বসেছে। তারা এখন নতুনদের সঙ্গে সিনিয়র এবং বাজার মূল্য আছে এমন শিল্পীদের তাদের নাটক বা অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত করতে যাচ্ছেন। কারণ দিন শেষে তো পণ্যটা বিক্রি করতে হবে কারো না কারো কাছে? পণ্যের বাজার মূল্য না থাকলে সেটা কে কিনবে? এত গেলো এক দিক। অন্য একটি দিক হচ্ছে কারিগরি দিক। আমাদের টিভি মিডিয়ার এখন পর্যন্ত বড় সংকট কারিগরি জ্ঞানওয়ালা দক্ষ জনশক্তির। আর এটা এমন এক বিষয় যে, আপনি চাইলেই কাউকে একদিনেই কারিগরি দক্ষতায় দক্ষ করতে পারবেন না। এর জন্য প্রয়োজন সময় এবং প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা। এ বিষয়টিও ভেবে দেখতে হবে।
এবার আসি আয় রোজগারের প্রসঙ্গে। মূলত সংবাদ মাধ্যমগুলোর প্রধান আয়ের ক্ষেত্র হচ্ছে বিজ্ঞাপন। নতুন ১১টি চ্যানেলের আয়ের উৎসও হবে এই বিজ্ঞাপন। কিন্তু যে হারে টিভি চ্যানেলের সংখ্যা বাড়ছে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছের মত সে হারে তো আর বিজ্ঞাপনের বাজার বাড়ছে না। প্রতিটি বিজ্ঞাপনদাতা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক একটা বাজেট থাকে বিজ্ঞাপন খাতের জন্য। তারা নিশ্চয়ই হুট করে সে বাজেট বাড়াবেন না। ধরা যাক সব মিলিয়ে বাংলাদেশে বিজ্ঞাপনের বাজার আছে ১০ টাকার। নতুন চ্যানেলের বৃদ্ধির কারণে সে বাজেট তো আর ২০ টাকা হবে না। সেটা ১০ টাকার জায়গায় ১২ টাকা হতে পারে। এখন কথা হচ্ছে এই দুই টাকা দিয়ে কি ১১টি টিভি চ্যানেল চলতে পারবে? এর সহজ উত্তর হবে ‘না’। মালিকপক্ষও নিশ্চয়ই টিভি চ্যানেলের নামে সেবামূলক প্রতিষ্ঠান খুলে বসতে যাচ্ছেন না। ফলে তাই হবে যা আগের টিভি চ্যানেলগুলোর ক্ষেত্রে হচ্ছে। প্রতিষ্ঠিত গুটিকয়েক টিভি চ্যানেল ছাড়া অধিকাংশ টিভি চ্যানেল ঠিকমত নিজেদের স্টাফদের বেতন ভাতাও দিতে পারছে না বলে শোনা যায়, নাটক আর অনুষ্ঠানে লগ্নিকারিদের কোটি কোটি টাকা আটকে আছে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে, চ্যানেলগুলো নিজেদের টিকিয়ে রাখতে শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞাপন অ্যাজেন্সিগুলোর কাছে নিজেদের সপে দিচ্ছে।
এখনও মাথা খাড়া করে দাঁড়াতে পারছে না তারা। এসবের মাঝে নতুন চ্যানেলগুলো যুক্ত হলে পরিস্থিতি আরো ভয়াভহ হবে বলেই মনে হচ্ছে। তবে এসবের মাঝেও কিছু আশার আলো আছে এই ১১টি টিভি চ্যানেলে কয়েক হাজার মানুষের কর্মক্ষেত্রের জায়গা তৈরি হবে। অনেক বেকারদেরই চাকরির জায়গা হবে। কিন্তু তারপরেও একটি অনিশ্চয়তার মাঝে থাকতে হবে তাদের।