দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বাংলাদেশেই যুদ্ধবিমান তৈরি করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমরা বিমান বাহিনীকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার কাজ করছি এবং বাংলাদেশেই যুদ্ধবিমান তৈরি করতে পারব বলে আশা করছি। আমাদের আকাশসীমা আমরা নিজেদের (শক্তি) দিয়ে যেন রক্ষা করতে পারি সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।’
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী বিমান বাহিনীর ১১ স্কোয়াড্রন ও ২১ স্কোয়াড্রনকে ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড হস্তান্তরকালে এসব কথা বলেন।
যশোরে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমানবন্দরে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় এবং প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এতে যুক্ত হন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা এবং প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে যাওয়ার পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি। ইনশাল্লাহ আমরা এ ব্যাপারে সাফল্য অর্জন করব বলে বিশ্বাস করি। ’
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যারোনটিক্যাল সেন্টার মিলে গবেষণা কাজ করা যেতে পারে বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় পতাকার মর্যাদা রক্ষা করা সশস্ত্র বাহিনীর সকল সদস্যের পবিত্র দায়িত্ব। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে আমরা জাতীয় পতাকা পেয়েছি। জাতীয় পতাকা পাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করা গৌরব ও সম্মানের। এ পতাকার মান রক্ষা করা সশস্ত্র বাহিনীর সবার দায়িত্ব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি মনে করি আপনারা এই মর্যাদা রক্ষা ও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে সদা প্রস্তুত থাকবেন। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ও আন্তর্জাতিকভাবে জাতিসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যখন দায়িত্বপালন করেন আমি মনে করি আপনারা সব সময় যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবেন। আপনারা আপনাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব এমনভাবে পালন করবেন যেন বাংলাদেশের মান-মর্যাদা বাড়ে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের স্বাধীনতার পর বিমান বাহিনী গড়ে তোলার প্রদক্ষেপের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা নীতিমালা প্রণয়ন করেন। তার সুদূরপ্রসারী কর্মপরিকল্পনা ও দূরদৃষ্টির আলোকে আমরা সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক ও যুযোপযোগী করার জন্য ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করেছি এবং তা বাস্তবায়ন শুরু করেছি।
শেখ হাসিনা এ সময় বিমান বাহিনীতে আধুনিক ও প্রযুক্তি নির্ভর বিভিন্ন সরঞ্জাম অন্তর্ভুক্তির সারাংশ তুলে ধরেন।
দেশে মুজিববর্ষ উদযাপন করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে দেশের সার্বিক উন্নয়ন এবং জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য বিশেষ করে যারা গ্রামীণ অঞ্চলে বসবাস করে তাদের জন্য ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে সরকার।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের প্রাক্কালে, আসুন নিজেদেরকে দেশপ্রেমিক ও নির্ভীক হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিজ্ঞা করি।
সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ ‘সোনার বাংলা’ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল মাসিহুজ্জামান সেরনিয়াবাত বিমান বাহিনীর ১১ স্কোয়াড্রন ও ২১ স্কোয়াড্রনের কাছে জাতীয় পতাকা তুলে দেন।
সূত্র : ইউএনবি