নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার মেয়র এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর ভাই আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। ক্ষমতার মালিক জনগণ, ক্ষমতার মালিক আল্লাহ। এতদিন শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখেছেন আল্লাহ। জনগণ রেখেছে এ কথা বলতে পারবে না। নিশ্চয়ই কোনো ভালো কাজ করেছেন, তাই আল্লাহ ক্ষমতায় রেখেছেন। জনগণের ভোটে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় নেই। এ কথা সত্য, প্রেসিডেন্টশিয়াল সরকার এদেশে থাকলে তিনি কোটি কোটি ভোটে ক্ষমতায় থাকতেন। আজ শেখ হাসিনার সাথে যারা আছে তারা অধিকাংশ অপকর্মের সাথে জড়িত।
আবদুল কাদের মির্জা সোমবার বিকেলে তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লাইভে এসে এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, আজকে যাদের মনোনয়ন দেয়া হচ্ছে তার অধিকাংশ অপকর্মের সাথে জড়িত। তাদের অপকর্মে আজকে আওয়ামী লীগের ভোট কমেছে। শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এদের কেন কমেছে এটা তদন্ত করার জন্য বলব।
আবদুল কাদের মির্জা আরো বলেন, ঢাকার মোহাম্মদপুরের বসিলায় আমাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছে কোম্পানীগঞ্জের মিজানুর রহমান বাদল, দাগনভূঞার মেয়র দিদার, ইস্কাদার মির্জা শামীম। শামীম সারাদেশ থেকে লুটপাট করে খাচ্ছে। ইস্কাদার মির্জা নামে আমার কোনো ভাগিনা নেই। ওবায়দুল কাদেরের আছে কিনা আপনারা সাংবাদিকরা ওবায়দুল কাদেরকে জিজ্ঞেস করবেন। তারা পাঁচজন বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমি ১১ তারিখ শপথ অনুষ্ঠানে যাওয়ার সময় আমাকে হত্যা করা হবে। তারা হাসান ঈমাম রাসেলের (আওয়ামী লীগ নেতা) সাথে যোগাযোগ করেছে। সে সমন্বয় করেছে। আমি তথ্য দিচ্ছি আপনারা (হাইকমান্ডের উদ্দেশে) তদন্ত করে দেখবেন। না হলে মনে করব আপনারাও ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত।
তিনি তার উপর হামলার বিষয়ে বলেন, দেশে আইনের শাসন নেই, মানুষের নিরাপত্তা নেই- এটা স্বীকার করতে হবে। কেন নেত্রী বলার পরেও একটা পিঁপড়ার উপরও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। যদি এটা ষড়যন্ত্র না হয়, নিশ্চয়ই নেত্রীকে কেউ না কেউ প্রভাবিত করেছে। আমি বলব, এটা ওবায়দুল কাদের করেছে। সে আমার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত। তার স্ত্রীর প্ররোচনায় এসব করছে। আমি কোনো এমপির জন্য নয়, এমপির জন্য ওনি ওনার স্ত্রীকে দাঁড় করাক। যাকে ইচ্ছা, তাকে দিক। আমি যদি এমপি পদ চাই, অমি যদি সেন্ট্রালের পদ চাই, নোয়াখালীতে পদ চাই আপনারা আমার জিহ্বা কেটে দেশের বাইরে পাঠিয়ে দিবেন।
তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা দিয়েছেন কি অপরাজনীতির জন্য? এভাবে দেশে লুটপাট চলবে? অন্যায় চলবে? অবিচার চলবে? দেশে আইনের শাসনে নেই, এটা কি চলতে দেয়া যায়? এই কথাগুলো আমি বলব। রক্তচক্ষু দেখাবেন না। আমি কাউকে ভয় করি না। আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডকে বলব, তারা যদি এ ঘটনাগুলো ব্যবস্থা না নেন তাহলে আল্লাহর গজব দেবেন। আল্লাহকে বলব, এদের উপর গজব দিন।
আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে জীবন দিতে হয়েছে। জিয়াউর রহমান চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জীবন দিয়েছেন। শেখ হাসিনা ১৭ বার হত্যার হত্যার হাত থেকে বেঁচে গেছেন। এদেশে কি হত্যার রাজনীতি বন্ধ হবে না? এটা কি চলতে দেয়া যায়? হত্যাকারীরা আজ রাজনীতির শীর্ষ স্থানে। আজকে যারা অপরাজনীতি করে তারা রাজনীতির শীর্ষ স্থানে। যারা আওয়ামী লীগের সাথে বেইমানি করেছে তারা আজ রাজনীতির শীর্ষ স্থানে। আজকে তারা এমপি, তারা মন্ত্রী। সাহস করে আমি এ সত্য কথাগুলো বলে যাব।
তিনি দলের নীতিনির্ধারকদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা আমাকে হত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একটা লোকের কারণে আমাদের সকল অপকর্ম ফাঁস হয়ে যাবে এ জন্য আমাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছেন। এটা আমি জানি। এটার খেসারত আপনাদের দিতে হবে।
এসময় তিনি চ্যানেল আই’র সাংবাদিক সোমা ইসলাম ও গাজীপুর মেয়রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে সমালোচনা করেন।