‘ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক আজ বসন্ত’। ঋতুরাজ বসন্ত এসে গেছে। প্রকৃতিজুড়ে দেখা দিয়েছে এক অপরূপ সৌন্দর্য্য। ফুটেছে ফুল, গাছে গাছে মুকুল আর কোকিলের কুহু কুহু ডাক। প্রকৃতির এই সৌন্দর্য্যের সঙ্গে বাসন্তী রঙে সেজেছে তারুণ্য। পথে পথে যেন চলছে বসন্তের মিছিল। এই মিছিলে ভিন্নমাত্রা যোগ করেছে ভালোবাসা দিবস। বাংলার এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে আজ একসঙ্গে দুই দিবসের উৎসবে মাতবে সবাই।
দিন পঞ্জিকা পরিবর্তনের কারণে গত বছর থেকেই বাংলাদেশে বসন্ত বরণের সঙ্গে যোগ হয়েছে ভালোবাসা দিবস। তাই তো একসঙ্গে দুই উপলক্ষে যেন যোগ হয়েছে বাড়তি আমেজ।
বসন্ত-ভালোবাসার এই দিনটিকে রাঙিয়ে তুলতে গত বছরও নানা আয়োজন ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায়। তার পাশেই বইমেলা। সবমিলিয়ে তারুণ্যের মিলনমেলা দেখা মেলে ঢাবি এলাকায়। শুধু ঢাবি নয়, দেশের প্রতিটি ক্যাম্পাসই যেন ছিল এক উৎসবের প্রাণকেন্দ্র। তারুণ্যের হরেক সাজে ক্যাম্পাসগুলো রঙিন হয়ে ওঠে। কিন্তু মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে এবার নেই বইমেলার আয়োজন। নেই ক্যাম্পাসে বসন্ত-ভালোবাসা উদ্যাপনের কোনো পরিকল্পনা। তবে এই তারুণ্য ক্যাম্পাসে উপস্থিত না হলেও থেমে থাকবে না নিজস্ব আয়োজন। বসন্ত-ভালোবাসাকে একসঙ্গে বরণ করতে মিলিত হবেন টিএসসি, ধানমণ্ডি লেক, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্ক কিংবা বোটানিক্যাল গার্ডেনে। অবশ্য একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাইরে কিংবা ক্যাম্পাসে কোনো মিলনমেলার আয়োজন না করতে পারলেও ভার্চ্যুয়াল বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠান করার কথা রয়েছে।
গতকাল থেকেই ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে বিশেষ এই দিনটি উদ্যাপন নিয়ে নানা পরিকল্পনার কথা জানান দেন অনেকেই। শুধু তাই নয়, রাত বারোটার আগেই শুরু হয়ে গেছে শুভেচ্ছা বিনিময়।
বাংলা পঞ্জিকা বর্ষের শেষ ঋতু বসন্তের প্রথম দিনকে বাঙালি পালন করে ‘পহেলা ফাল্গুন-বসন্ত উৎসব’ হিসেবে। বাঙালির নিজস্ব সর্বজনীন প্রাণের উৎসবের মাঝে এ উৎসব এখন গোটা বাঙালির কাছে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছে। এই উৎসব এখন প্রাণের উৎসবে পরিণত হয়েছে। মোগল সম্রাট আকবর ১৫৮৫ খ্রিস্টাব্দে প্রথম বাংলা নববর্ষ গণনা শুরু করেন। নতুন বছরকে কেন্দ্র করে ১৪টি উৎসবের প্রবর্তন করেন তিনি। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বসন্ত উৎসব। ১৪০১ বঙ্গাব্দ থেকে ‘বসন্ত উৎসব’ উদ্যাপন শুরু হয়। সেই থেকে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদ্যাপন পরিষদ বসন্ত উৎসব আয়োজন করে আসছে।