শুধু পরীক্ষার্থীদের জন্যই ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে সীমিত পরিসরে স্কুল কলেজ খুলছে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও পরীক্ষার্থী ছাড়া অন্য ক্লাসের নিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য ক্লাস চালুর বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সূত্রমতে, কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ডিপ্লোমা কোর্সের বিভিন্ন পরীক্ষা এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স বিভিন্ন পর্বের পরীক্ষা নিতে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকেই সীমিত পরিসরে খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। করোনার এই সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাসে ফেরানো হচ্ছে শুধু এসএসসি, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থীদের। তবে তারিখ এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সের কিছু পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। একইসাথে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯ সালের ডিগ্রি পাস ও সার্টিফিকেট কোর্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষাও শুরু হবে আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি। এই পরীক্ষা চলবে আগামী ২৩ মার্চ পর্যন্ত। এই দুই প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। সম্প্রতি কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে অনুষ্ঠিত ডিপ্লোমা পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও পরিচালকদের সাথে মতবিনিময় সভায় পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে বেশি কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেখানে আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ডিপ্লোমা কোর্সের পরীক্ষা শুরুর সিদ্ধান্ত হয়।
একই সাথে এই পরীক্ষার সময় ও নম্বর কমিয়েও পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কারিগরি শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানায়, ২০১০ ও ২০১৬ প্রবিধানের সব বিষয়ের ৩ ঘণ্টার পরীক্ষা ২ ঘণ্টা ও ২ ঘণ্টার পরীক্ষা ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিটে নেয়া হবে। পরীক্ষার্থীদের প্রশ্নপত্রে মুদ্রিত মোট নম্বরের অর্ধেক বা ৫০ শতাংশ উত্তর দিতে হবে। সব বিভাগের যেকোনো প্রশ্ন থেকে শিক্ষার্থীরা ৫০ শতাংশ উত্তর দিতে পারবেন। আর পরীক্ষার্থীদের প্রাপ্ত নম্বরকে মোট নম্বরের বিপরীত রূপন্তরিত করে ফল নির্ধারণ করা হবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক সৈয়দ গোলাম ফারুক নয়া দিগন্তকে জানান, আগামী মাস (ফেব্রুয়ারি) থেকে সীমিত পরিসরে শুধু পরীক্ষা গ্রহণের জন্যই কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে। তবে ফেব্রুয়ারি থেকে সব শিক্ষার্থীর ক্লাস শুরু হবে না। এ ক্ষেত্রে চলতি বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সিলেবাস শেষ করতে কয়েকটি ধাপে ক্লাস শুরু করা হবে। অন্যদের নিয়মিত ক্লাস শুরুর বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
অবশ্য মাউশির অন্য একটি সূত্র জানায়, এসএসসি ও এইচএসসি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও মানবিক বিভাগ থেকে প্রতিদিন একটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেয়া হবে। বর্তমানে সে ধরনের ক্লাস রুটিন তৈরির কাজ শুরু করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনাও দিয়েছে মাউশি। সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে ফেব্রুয়ারিতে স্কুল খুলে দেয়ার চিন্তা ভাবনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছিলেন। এরপর থেকে অবশ্য এ বিষয়ে প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট দফতর-সংস্থাগুলো এ বিষয়ে কাজ করেছে বলেও জানা গেছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এর আগে করোনার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি কয়েক ধাপে বাড়িয়ে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছিল। সবশেষ সেই ছুটি আরো এক দফা বাড়িয়ে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে।