মসজিদের ইমামকে জুতাপেটা মুসুল্লিদের বিক্ষোভ

জাতীয় ফুলজান বিবির বাংলা


রাতুল মন্ডল নিজস্ব প্রতিনিধি: গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম মসজিদের ইমামকে জুতা পেটা করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন মসজিদ মসজিদ মাদ্রাসার ইমাম ও স্থানীয়রা।

সোমবার (১৮ জানুয়ারি) গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের উত্তর চকপাড়া বায়তুন নূর জামে মসজিদের মুসুল্লীরা ইমামকে জুতাপেটা করা প্রতিবাদে নারায়ে তাকবির, আল্লাহু আকবার ধ্বনি দিয়ে সড়কে বিক্ষোভ মিছিল করেন। বিক্ষোভ মিছিল শেষে রফিকের বিচার দাবী করে বক্তব্য রাখেন, বিভিন্ন মসজিদের ইমামগণ।

তাদের দাবী মসজিদের ইমামকে মারধর করেছে, জুতা দিয়ে পিটিয়েছে মাওনা ইউনিয়ন ২নং ওয়ার্ড আওয়ামীগ সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম।

মসজিদের সভাপতি মো. আবু সায়েম বলেন, গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১১ টার সময় হুজুর তাঁর রুমেই ঘুমিয়ে ছিলেন। পাশের বাড়িতে গরু জবেহ করার জন্য ইমাম সাহেবকে ডাকছিলেন এক যুবক, হুজুর উঠছিলেন না। কোনো সাড়া শব্দও করছিলেন না। এমন সময় পাশের রুমেই শুয়ে থাকা ওয়ার্ড আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক মো. রফিকুল ইসলাম হুজুরকে চিল্লাইয়া বকা শুরু করেন। এক পর্যায়ে হুজুরের ঘুম ভাঙলে তিনি বলেন দেখুন সারাদিন অনেক পরিশ্রম করেছি তাছাড়া গতরাতেও অনুষ্ঠানের কারণে ঘুমাতে পারিনি। কেনো ডাকছেন বলুন। রফিক বকছে আর বলছে আপনাকে কি টাকা দিয়ে রাখেনি, ডাকলে উঠেন না কেনো? হুজুর বললেন, আমি শুনিনি, কিভাবে উঠবো? আর আপনি এভাবে বকছেন কেনো? আমি আপনার কাছে জবাব দিতে রাজি নই, প্রয়োজনে আমার মসজিদ কমিটির কাছে জবাব দিবো, দয়া করে এভাবে বকবেন না। এটুকু বলতেই রফিক পায়ের জুতা খুলে ইমাম সাহেবকে পিটাতে শুরু করেন। পরে হুজুর দৌড়িয়ে নিরাপদ স্থানে যান। এই ঘটনা এলাকার আরো কয়েকজন দেখেছে এবং রাতেই আমাকে ফোনে জানিয়েছে। ফজরের নামাজ পরে আমি মুসুল্লিদের সাথে বসি এবং এর সত্যতা পাই। কাজেই আমরা এর কঠোর বিচার দাবী করছি। হুজুর অনেকদিন ধরেই আমাদের মসজিদের ইমাম হিসেবে রয়েছেন। তিনি খুব ভালো মানুষ। আইনী বিষয় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি।

মসজিদের ইমাম, মুফতি মাওলানা মো. আব্দুল মজিদ জানান, কোনো অপরাধ না করে এভাবে কেউ আমাকে জুতা দিয়ে পিটাবে, কিভাবে সহ্য করবো? রফিক আমাকে শুধু জুতা দিয়ে মেরেই শান্ত হয়নি আজকে সকালেও হুমকি দিয়েছে, আমাকে নাকি জুতার মালা গলায় পরিয়ে রাস্তায় ঘুরাবে। মসজিদে ইমামতির পাশাপাশি স্থানীয় মারকাযু সুন্নাতিন্নাবী (সা:) মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করি। অনেক শিক্ষার্থীদের পবিত্র গ্রন্থ আল কুরআন শিক্ষা দিই। আমি কিভাবে মুখ দেখাবো। প্রথমে ঘটনাটি আমি কাউকে বলিনি, যারা ঘটনাস্থলে ছিলো তারাই সভাপতিকে জানিয়েছেন। আলেম সমাজ ও আমার ছাত্রদের কাছে আমি কিভাবে মুখ দেখাবো। আল্লাহর রাসূলকে ভালোবেসে মুখে দাঁড়ি রেখেছি, ইসলাম প্রচারে নিজেকে উৎসর্গ করেছি। সেই দাঁড়ি রাখা মুখে কিভাবে জুতা মারলো, বলতে পারবেন?
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রফিকুল ইসলাম জানান, হুজুরের সাথে আমার কথা কাটাকাটি হয়েছে, গায়ে হাত দিইনি। তাছাড়া এর জন্য ঐ রাতেই হুজুরের সাথে স্যরি বলে বিষয়টি মিটিয়ে নিয়েছি। এলাকায় আমার বিপক্ষের কেউ কেউ এটা নিয়ে রাজনীতি শুরু করেছে, এর আগেও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। বিষয়টি জটিল করেছে। অথচ আমি রাতেই শেষ করেছি।

মাওনা চকপাড়া অস্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. সোহেল রানা জানান, এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *