তারিখ: ৩১ জানুয়ারী, ২০১৫
“সমগ্র দেশবাসী অত্যন্ত পরিতাপের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, ক্ষমতালিপ্সু অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেত্রী শেখ হাসিনা গদি রক্ষার জন্য এবং অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার মানসে গণতন্ত্রের কবর রচনা করেছেন। দেশে গণতন্ত্রের নামে ‘মার্শাল ডেমোক্রেসী’ প্রবর্তন করেছেন। বর্তমানে দেশে একদলীয় সরকার ব্যবস্থা কায়েমের পর একদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রবর্তন করার মানসে এক ব্যক্তির ইচ্ছাকেই আইনের উৎসে পরিণত করা হচ্ছে। জনগণের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক সকল অধিকার ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। সভা-সমাবেশ ও কথা বলার অধিকার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
দেশের সর্ব বৃহৎ গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল-বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অবরুদ্ধ করা হয়েছে দেশের তিন বারের প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন ও ২০ দলীয় জোট নেতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে। বস্তুত: সারাদেশের জনগণই আজ অবরুদ্ধ এবং বাংলাদেশ নামের এই জনপদ বিশাল কারাগারে পরিণত হয়েছে।
গতকাল গভীর রাতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আবাসস্থল দলের চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়কে জনসভায় ঘোষনা দিয়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। ইন্টারনেট, ব্রডব্যান্ড ও ক্যাবল লাইনসহ সকল বৈদ্যুতিক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। সরকারী দল ঘোষনা দিয়েছে পানি, গ্যাস ও খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দিবে। সভ্য দুনিয়ার ইতিহাসে এরকম ঘৃনিত ও জঘন্য নজির কোথাও পাওয়া যাবেনা। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
অবিলম্বে বিছিন্ন বিদ্যুৎসহ সকল যোগাযোগ মাধ্যম পূণ:স্থাপনের ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরকে আহবান জানাচ্ছি। অন্যত্থায় উদ্ভুত যেকোনো পরিস্থিতির জন্য সরকার দায়ী থাকবে এবং এর পরিণতি কখনোই শুভ হবেনা।
আমরা দেশের এবং বিশ্বের সকল মানবাধিকার সংস্থা, সংগঠন ও মানবাধিকার কর্মীদের কাছে আহবান জানাই-আপনারা আসুন, দেখুন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের নামে কত ঘৃন্য জংলীতন্ত্র কার্যকর হয়েছে ভোটারবিহীন এই সরকারের বদৌলতে। জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কাছে আবেদন জানাই-আপনারা বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি অনুধাবন করে যথাযথ কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
গতরাতে বিএনপি’র সংগ্রামী যুগ্ম মহাসচিব জনাব রুহুল কবির রিজভীকে সরকারী পেটোয়া বাহিনী র্যাব গ্রেফতার করেছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সময়ের সাহসী পুরুষ সংগ্রামী জননেতা রুহুল কবির রিজভীর গ্রেফতারের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তার নি:শর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি। একই সাথে ইতোপর্বে সারাদেশ থেকে গ্রেফতারকৃত বিএনপি ও জোটের সকল নেতা-কর্মীর নি:শর্ত মুুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি। চলমান আন্দোলনে সরকারী পেটোয়া বাহিনী কর্তৃক নিহত শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে তাদের শোকাহত পরিবার পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।
দলীয় সন্ত্রাসী বাহিনী, সরকারী পেটোয়া আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে গ্রেফতার নির্যাতনের স্টীম রোলার চালিয়ে গণতন্ত্র পূণ:রুদ্ধারের জনগণের বৈধ আন্দোলনকে স্তব্ধ করা যাবেনা।
গণতন্ত্রকামী সংগ্রামী জনগণের আন্দোলনের দাবানল দাউদাউ করে জ্বলে উঠবে আরো তীব্র গতিতে। দেশের সকল মুক্তিকামী মানুষের বাড়ীঘরকে এখন আন্দোলনের সুতিকাগারে পরিণত করার আহবান জানাচ্ছি। প্রত্যেক ঘরে ঘরে গণতন্ত্রের মুক্তি আন্দোলন গড়ে তুলুন।
বিএনপিসহ ২০ দলীয় জোট, দেশের সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল ও জোট, বরেণ্য নাগরিকবৃন্দ, সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবী, সাংবাদিক বন্ধুগণসহ সকল গণতন্ত্রকামী সংগ্রামী জনগণের প্রতি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে আহবান জানাই-অবরুদ্ধ ও বিলুপ্তপ্রায় গণতন্ত্রের মুক্তির দাবিতে মৌলিক, মানবাধিকার ও আইনের শাসন এবং ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে আপনারা ঐক্যবদ্ধভাবে অবিরাম সংগ্রাম চালিয়ে যান।
সংগ্রামী জনতার বিজয় অনিবার্য ইনশাল্লাহ।”
(সালাহ উদ্দিন আহমেদ)
যুগ্ম মহাসচিব
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি।