নোয়াখালী কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট পৌরসভার আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থী এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই আবদুর কাদের মির্জা বলেছেন, ‘আমি কাউকে ভয় পাই না, সত্য কথা বলবো।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এমপিরা মদ ও নারী নিয়ে থাকে, পুলিশ তাদের স্যালুট করে, এরা পুলিশের ছত্রছায়ায় মদ খায়। এটা কি চলতে দেয়া যায়? এদের আস্তানা খুঁজে, এদের বিরুদ্ধে জনবিস্ফোরণ ঘটিয়ে যাতে ভবিষ্যতে এসব না করতে পারে, সে ব্যবস্থা করতে হবে।’
তিনি বৃহস্পতিবার বসুরহাটের রুপালি চত্বরে আয়োজিত নির্বাচনী সমাবেশে এসব কথা বলেন।
আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে প্রমাণ করে দিতে চাই গণতন্ত্র কি জিনিস? আমি প্রমাণ করে দিতে চাই অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন কি জিনিস? বঙ্গববন্ধুর স্বাধীনতা দিয়েছে, এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। আমরা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আন্দোলন করেছি, এদেশের মানুষের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক মুক্তি অর্থাৎ ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছেন কিন্তু এদেশে পূর্ণাঙ্গভাবে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। আমি বলেছি, সাহস করে সত্য কথা বলব। আমি ভয় পাই না। সত্য বলব।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি এ নির্বাচনকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে নিয়েছি। ওবায়দুল কাদের সাহেবের কোম্পানীগঞ্জ ও বসুরহাট পৌরসভার এমন কোনো রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট, স্কুল-কলেজ, মাদরাসা-মক্তব- এমন কোনো জায়গা নেই, যেখানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। ওবায়দুল কাদের সাহেব মন্ত্রী না হলে বুঝতে পারতাম না একজন মন্ত্রী এতো কাজ করতে পারে।’
আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। নোয়াখালীর এমপি, ফেনীর এমপি আমাদের প্রতিপক্ষ দলের জন্য এক কোটি টাকা পাঠিয়েছে। এখানে শুধু আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে না, আমার কাউন্সিলরদের বিরদ্ধেও ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আজকে ভোটারদের টাকা দেয়া হচ্ছে প্রতিপক্ষ কাউন্সিলরদের মাধ্যমে। আমি আপনাদের স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, টাকা দিয়েছে খেয়ে ফেলেন। এটা আমাদের টাকা, যা লুটপাট করেছে সেটা এখানে পাঠিয়েছে। আমাদের নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য এসব করা হচ্ছে।’
তিনি নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলেকে ব্যঙ্গ করে ‘রাজপুত্র’ অ্যাখ্যা দিয়ে বলেন, ‘একরাম চৌধুরীর ছেলে কোম্পানীগঞ্জে অস্ত্র পাঠিয়েছে। ওই অস্ত্র প্রশাসনের লোকজনকে বলেছি উদ্ধার করার জন্য। অদৃশ্য কারণে কিছুই হচ্ছে না। আজকে বড় কষ্ট লাগে, নোয়াখালী কে চালচ্ছে? নোয়াখালীর নেতা কে? একরামের ছেলে? আমাদের এক সিনিয়র নেতা নির্বাচনে রাজপুত্রের ছবি লাগিয়েছে। এটা কি রাজনীতি? অস্ত্রের ঝনঝনানি কোম্পানীগঞ্জে কি চলবে? এটা চলতে দেয়া যায় না।’
আবদুল কাদের মির্জা আশংকা করে বলেন, ‘এখানে কাউকে মেরে ফেলতে পারে, মেরে ফেলে অন্যের উপর দোষ চাপাতে পারে। ডা: মিলনকে হত্যা করেছে বামেরা, আন্দোলন চাঙ্গা করার জন্য। ভোট প্রশ্নবিদ্ধ কারার জন্য এখানেও এ ধরনের কাজ সংগঠিত করতে পারে। সাবধান থাকবেন। প্রশাসন কিছুই করবে না। প্রশাসন কিভাবে করবে? নোয়াখালীর ডিসি একরাম চৌধুরীর মাস্ক লাগিয়ে ঘুরে। প্রশাসন একরাম চৌধুরীর কথায় চলে।’
তিনি বলেন, ‘পরশু আমাদের নির্বাচন কমিশনার শাহদাত হোসেন এখানে আসার কথা ছিল। কিন্তু তিনি আসেনি। কেন আসেননি তিনি জানেন আর তার আল্লাহ জানেন। এটা কি ষড়যন্ত্র নয়? আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আগামী পরশুর নির্বাচন যদি অবাধ, নিরপেক্ষ না হয়, যদি কোনো কর্মীকে রাস্তায় বাধা দেয়া হয়, যদি কোনো মায়ের বুক খালি করা হয়, যদি কোনো কর্মীর রক্তে রঞ্জিত হয়, কারো বাড়িঘর পোড়ানো হয়- এটার দায়িত্ব নোয়াখালীর ডিসি, এসপি এবং নির্বাচন কমিশনারকে নিতে হবে।’
নিক্সন চৌধুরী সম্পর্কে আবদুল কাদের মির্জা বলেন, ‘ফরিদপুরের রাজপুত্র (ব্যঙ্গ করে) নিক্সন চৌধুরী সাহেব, আপনি বলেছেন, চুনোপুটির কথা কে শুনে, শেখ হাসিনার সাথে দেখা করার এবং কথা বলার সুযোগ নেই। আপনার বয়স কত? আমার রাজনীতির বয়সও আপনার হয়নি। মানলাম আমি চুনোপুটি, গ্রামে থাকি। আপনি আমাদের ত্যাগী নেতা জাফরউল্যা সাহেবের আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোট চুরি করে এমপি হয়েছে। আপনার দৈহিক শক্তি আছে, সাঙ্গপাঙ্গ আছে। শেখ হাসিনার কাছে যেতে আপনার মতো রাঘব বোয়ালদের কি দরকার হবে? আপনি একরাম চৌধুরী, নিজাম হাজারীর অনুসারী।’