সাইফুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের সাগরদিঘী ইউনিয়নের মালিরচালা গ্রামে চোর সন্দেহপূর্বক সন্ধ্যা রানী (৩৬) নামে এক আদিবাসী নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে।
রবিবার (১০ জানুয়ারি) রাতে নারায়ণ বর্মণের স্ত্রী (নির্যাতিত নারী) সন্ধ্যা রাণী বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।
আসামিরা হচ্ছেন; মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া (৮০), মনিরুলেরই ছেলে মোস্তফা ভূঁইয়া (৪৫) ও সজিব ভূঁইয়া (৪০) এবং মনিরুলের মেয়ে খুকি (৩৭) ও সুমি আক্তার (৩২)।
মামলার সূত্রে জানা যায়, “ভুক্তভোগী সন্ধ্যা রানী দুই সন্তানের মা। তার ছোট ছেলে পলাশ (৮) একই গ্রামের মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়ার পরিবারের ছেলে মেয়েরে সাথে প্রায়ই খেলা করতেন। গত ১৫ দিন পূর্বে পলাশ মনিরুল ভূঁইয়ার বাড়ি থেকে ঘুড়ি বানানোর জন্য পত্রিকা নিয়ে এসেছিল। অপরদিকে হঠাৎ মনিরুলের বাড়ি থেকে স্বর্ণ ও টাকাসহ মূল্যবান কাগজপত্রও চুরি গেলে এ ঘটনার জের ধরে গত (৩ জানুয়ারি) শিশু পলাশকে তারা বাড়িতে ধরে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন এবং মালামাল চুরি করে তার মায়ের কাছে জমা দেওয়ার স্বীকারোক্তি আদায় করেছিলেন। এরপর গত (৯ ই জানুয়ারি) মনিরুলের দুই বোন খুকি (৩৭) ও সুমি আক্তার (৩২) সন্ধ্যা রানীর বাড়ি গিয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে তারা সন্ধ্যাকে বাড়ির পাশের একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। আর এ সময় মনিরুল ভূঁইয়া তারই ছেলে মোস্তফা ও তারই বোন মিলে তাকে লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়িভাবে মারধর করেন। এরপরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন।”
মামলার আসামি মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, “আমার ছোট বোনের গহনা চুরি করেছিল সন্ধ্যা রানীর ছেলে পলাশ ; কিন্তু সে চুরি করা গহনা তার মায়ের কাছে জমা দেয় এবং বারবার চাইলেও তারা দেয় না। সেজন্য আমার ছোট বোন সুমি সন্ধ্যা রানীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন কিন্তু আমরা তা কিছু জানি না।”
প্রত্যক্ষদর্শী মহানন্দ চন্দ্র বর্মণ বলেন, “ঘটনার দিন সন্ধ্যা থেকে প্রায় চার ঘণ্টা সন্ধ্যা রানীকে বেঁধে রাখা হয়েছিল। আর এ সময় তার ৬ মাসের নবজাতক শিশু বাচ্চাকেটিকে মায়ের কোলে যাবার জন্য খুব কান্না করা সত্ত্বেও মায়ের বুকের দুধও খেতে দেননি। এরপরে আমি দুই বন্ধুর সহযোগিতায় সন্ধ্যা রানীকে উদ্ধার করেছিলাম। সন্ধ্যা রাণী বর্তমানে আমার বাড়িতে আছেন।”
আর এ বিষয়ে ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত কর্মকর্তা) ছাইফুল ইসলাম বলেন, “মামলার তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে এবং দ্রুত আসামিদেরকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”