রাতুল মন্ডল নিজস্ব প্রতিনিধি; গাজীপুরের শ্রীপুরের শৈলাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক(আইসিটি) শাহীন মিয়া। ২০১৮ সাল থেকে উক্ত বিদ্যালয় থেকে এমপিও ভুক্ত শিক্ষক হিসেবে বেতন ভাতার সরকারী সুযোগ সুৃবিদা গ্রহন করে আসছেন তিনি।
এর পাশাপাশি একই উপজেলার মোসলেহ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের একই পদের শিক্ষক হিসেবে ২০২০ সালে বেতন ভাতার সরকারী অংশ উত্তোলন করেন তিনি।
একই পদে ভিন্ন দুটি ইনডেক্সের মাধ্যমে দুটি বিদ্যালয় থেকে সরকারী সুবিদা ভোগ করার বিষয়টি নজরে আসলে একটি হিসাবে উত্তোলনকৃত সরকারী অংশের টাকা জমা দিয়ে বিদ্যালয়ে পদত্যাগ পত্র প্রেরণ করেন। এ ঘটনায় স্থানীয় শিক্ষা অফিস তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
দুটি বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, আইসিটি বিভাগের এই শিক্ষকের নাম শাহীন মিয়া তার বাবার নাম আব্দুর রহমান। তার বাড়ী একই উপজেলার গলদাপাড়া গ্রামে। এই শিক্ষক ২০১৪সালে ননএমপিও ভুক্ত শ্রীপুরের আবদার গ্রামের আলহাজ্ব মোসলেহ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (আইসিটি) শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। দীর্ঘদিন উক্ত বিদ্যালয়টি এমপিও না হওয়ায় তিনি পাশের গাজীপুর ইউনিয়নের শৈলাট উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০১৮ সালে নিয়োগ লাভ করেন। এর পর তিনি এমপিওভুক্ত হন। সেখানের ইনডেক্স অনুযায়ী উক্ত বিদ্যালয় থেকেই সরকারী সুযোগ সুবিদা ভোগ করে আসছিলেন।
এদিকে গত বছর আলহাজ্ব মোসলেহ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়টি এমপিও ভুক্ত হলে সেখানেও তার ভিন্ন একটি ইনডেক্স হয়। পরে এই বিদ্যালয় থেকেও তিনি সরকারী সুযোগ সুবিদা ভোগরত ছিলেন। এদিকে দীর্ঘদিন করোনাকালীণ সময়ে বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সুযোগে বিষয়টি নজরে আসেনি। ধারণা করা হচ্ছে প্রধান শিক্ষক ও অভিযুক্ত এই শিক্ষক মিলে সরকারী অর্থ হাতিয়ে নেয়ার এই প্রক্রিয়া চালাচ্ছিলেন।
এ বিষয়ে শৈলাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কামরুল হাসান বলেন, তার এখানে নিয়োগের পর ২০১৮ সাল থেকে নিয়মিত বেতন ভাতা উত্তোলন করছেন এই শিক্ষক। তার এখানে নিয়মিত হাজিরাও রয়েছে। অন্যস্থানে তার চাকুরী করার তথ্যটিও তিনি জানতে পারিননি। তবে দুজায়গা থেকে বেতন উত্তোলন করে তিনি গর্হিত অপরাধ করেছেন।
আলহাজ্ব মোসলেহ উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক স্থানীয় গাজীপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আজাহারুল ইসলাম তালুকদার। এই বিদ্যালয়টি গত ২০২০ সালে এমপিও ভুক্ত হয়। সেখান থেকেই অভিযুক্ত শিক্ষক বেতন ভাতা উত্তোলন করেছিলেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন,এ ঘটনাটি যে কিভাবে হলো তিনি বুঝতে পারছেন না। তবে অভিযুক্ত শিক্ষক পদত্যাগ পত্র (রিজাইন লেটার) পাঠিয়েছে। সে তার ভুল বুঝতে পেরে গত কাল ৮৩ হাজার টাকা তার হিসাবে জমা দিয়েছেন। দুই একদিনের মধ্যে হয়তো পুরো টাকাটাই ফেরত দিবেন।
অভিযুক্ত শিক্ষক শাহীন মিয়ার দাবী তিনি দু’জায়গা হতে বেতন ভাতা উত্তোলন করে ভুল করেছেন। তাই একটির টাকা ফেরত দিয়ে রিজাইন দিয়েছেন।
এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুরুল আমীন বলেন,এ বিষয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি তদন্ত করে রিপোর্ট দিবেন।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলতানা বলেন, চাকুরী বিধি অনুযায়ী একজন শিক্ষকের দু’টি বিদ্যালয় থেকে সরকারী সুযোগ সুবিদা নেয়ার কোন সুযোগ নেই। অভিযুক্ত যদি ভূল তথ্য দিয়ে দুটি ইনডেক্সের মাধ্যমে বেতন ভাতা উত্তোলন করে থাকেন তাহলে গর্হিত অপরাধ করেছেন। অভিযোগ প্রমানিত হলে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।