মানহানিকর, উস্কানিমূলক, ও ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহা ও প্রদীপ দাসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী।
সোমবার বাংলাদেশ সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আসসামছ জগলুল হোসেনের আদালতে নারায়নগঞ্জের সিটি করপোরেশন মেয়র সেলিনা হায়াত আইভী এই মামলা দায়ের করেন।
বিচারক বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে সিআইডিকে অভিযোগ বিষয়ে তদন্ত করে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিজ্ঞ সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত ঢাকায় উপস্থিত হয়ে অভিযোগটি দায়ের করেন তিনি। (পিটিশন মামলা নং-০৮/২০২০, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারা ২০১৮ এর ২৫, ২৭, ২৮, ২৯, ৩১ এবং ৩৫)। পরে অভিযোগটি আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি মামলার শুনানীর দিন ধার্য করা হয়েছে। মামলায় ‘হিন্দু লাইভস মেটার’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনাকারী কানাডা প্রবাসী প্রদীপ দাসকে ১ নাম্বার আসামী করা হয়েছে। আর খোকন সাহাকে করা হয়েছে দ্বিতীয় আসামি।
মামলার অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘২৩ নভেম্বর ও ১ ডিসেম্বর পৃথক দু‘টি ই্উটিউব ভিডিওতে প্রবাসী প্রদীপ দাসের পরিচালনায় নারায়ণগঞ্জ মেয়র আইভীকে খোকন সাহা বলেছেন, হিন্দুদের দেবোত্তর সম্পত্তি বাদীনি তথা মেয়র এর দাদা মাহাতাব উদ্দিনসহ পরিবার বর্গ অবৈধভাবে দখল করে আসছে। মাননীয় নেত্রী আপনি আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের অভিভাবক, আপনি আমাদের অভিভাবক, যারা আওয়ামী লীগ করে, এই দখলদারদের নমিনেশন দিবেন না। তাদেরকে আপনি আনবেন না। মেয়র আইভী হিন্দুদের ভোট নেয়। নিয়া কালীপূজা করে সিন্দুর দিয়া, কালী মাকে প্রনাম করে। আমি হিন্দু সমাজকে একতাবদ্ধ করার চেষ্টা করছি এবং বলছি যারা দেবোত্তোর সম্পত্তি গ্রাস করে তাদেরকে আপনারা ভোট দিবেন না।’
এ সব বক্তব্য নিয়ে মেয়র আইভী আর্জিতে উল্লেখ করেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও অনুভুতিতে আঘাত করায় সামাজিক অস্থিতিশীলতা ও সাম্প্রদায়িক দাংঙ্গা ঘটানোর উদ্দেশ্যে এবং রাজনৈতিক ফায়দা লাভের জন্য ইউটিউবে ও ফেসবুকে প্রচার করে ভাইরাল করে দেয়। যা মিথ্যা বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর। যা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫, ২৭, ২৮, ২৯, ৩১ এবং ৩৫ ধারার অপরাধ।’
তবে মামলার আসামী নারায়ণগঞ্জকে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট খোকন সাহা বলেন, আমি একটা ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি অনুষ্ঠানে বলেছিলাম দেওভোগ লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দিরের দেবোত্তর সম্পত্তি জিউস পুকুরের দাম এগারশ কোটি টাকা হবে। আসলে মসজিদ মন্দির কিংবা ওয়াকফ দেবোত্তর সম্পত্তির দাম অমূল্য। আমি জিউস পুকুর নিয়ে যে কথা বলেছি সেটা বিপুল সংখ্যক হিন্দু জনগোষ্ঠির মনের কথা ব্যক্ত করেছি। আমি মামলাটি আইনগতভাবেই মোকাবেলা করব।