হাটহাজারী (চট্টগ্রাম): দেশ ও জাতির কল্যাণে কওমী মাদরাসা ও ওলামায়ে কেরামের অবদান অনস্বীকার্য। নায়েবে নবী ওলামায়ে কেরামের সাথে এদেশের জনসাধারণের সম্পর্ক হলো আত্মার। এ দেশের মানুষ ইসলাম প্রিয়, আলেম-ওলামা প্রিয়। ওলামায়ে কেরাম ও আমজনতার মধ্যকার এই সম্পর্ক নাস্তিক মুরতাদ আর রামবামরা সহ্য করতে পারে না। তাই তারা গুটিকয়েক মানুষকে ওলামায়ে কেরামের বিরুদ্ধে কটুক্তি ও বিষোদগারের জন্য লেলিয়ে দিয়েছে। তৌহিদী জনতার দেশে আলেম-ওলামা ও ইসলাম বিদ্বেষীদের ঠাঁই হবে না। শুক্রবার আলজামিআতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদরাসার বার্ষিক মাহফিল ও দস্তারবন্দী সম্মেলনে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এসব কথা বলেন।
এ সময় জামিআর মজলিসে ইদারী‘র প্রধান মুফতী আজম আল্লামা আব্দুচ্ছালাম চাটগামী দা: বা:-এর উদ্বোধনী বক্তব্যের মাধ্যমে মাহফিলের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। অনুষ্ঠানে ওলামায়ে কেরাম নির্ধারিত বিষয়ে তাকরীর পেশ করেন। চলমান বিভিন্ন ইস্যুতে মুসলিম উম্মাহকে দ্বীনি দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়। একই দিন বা’দ ইশা দস্তারবন্দী সম্মেলনে গত বছরের দাওরায়ে হাদীস উত্তীর্ণ দুই শতাধিক শিক্ষার্থীদের পাগড়ী সনদ প্রদান করা হয়।
এ সময় প্রধান অতিথি ছিলেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।
মাহফিলে দেশ ও জাতির উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যে জামিআর শায়খুল হাদীস ও শিক্ষা পরিচালক হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমীর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, যারা কওমী মাদরাসার শত্রু, যারা কওমী মাদরাসার ঐক্যকে ভাঙতে চায়, যারা কওমী শিক্ষাকে উৎখাত করতে চায় তারা শুনে রাখুন আপনারা কওমী মদরাসাকে উৎখাত করতে পারবেন না বরং আপনারাই উৎখাত হয়ে যাবেন। আলেম ওলামরা হলেন নবীগণের ওয়ারিশ। আলেম ওলামার মাধ্যমে নবীগণের কাজ চলমান থাকবে।
তিনি আরো বলেন, করোনায় মারা যাওয়া মানুষের লাশ দাফনের জন্য যখন কেউ এগিয়ে এলো না, লাশ ফেলে রেখে স্বজনরা পালিয়ে গেলো তখন ওলামায়ে কেরাম তাদের লাশ দাফন-কাফনের মতো বিশাল সেবামূলক কাজ করেছেন। ওলামায়ে কেরাম না থাকলে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতদের লাশ কুকুর-শেয়ালে ছিঁড়ে ছিঁড়ে খেতো। আল্লামা শাহ জমির উদ্দিন রহ:-এর প্রতিষ্ঠিত আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন, আল মারকাজুল ইসলামী এবং তাকওয়া ফাউন্ডেশন করোনার সময় সেবামূলক অনেক কাজ করেছেন। সুতরাং ওলামায়ে কেরামকে নিয়ে বিষোদগার করলে এদেশের তৌহিদী জনতা বরদাশত করবে না।
তিনি আরো বলেন, গোলাম আহমদ কাদিয়ানী কখনো নবী হতে পারে না। তিনি ইংরেজদের দালাল। তাকে যারা নবী মানবে তারা নিঃসন্দেহে কাফের। কাদিয়ানীরা সন্দেহ ছাড়া কাফের। ৯০% মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশে মুসলিম পরিচয়ে কাদিয়ানীরা থাকতে পারে না। কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে।
তিনি বলেন, ওলামায়ে কেরাম নবী-রাসুলের উত্তরসূরি হিসেবে দীপ্ত কণ্ঠে জাতির সামনে হক কথা বলবেন। হক ও ন্যায়ের কথা বলতে ওলামায়ে কেরাম কারো রক্তচক্ষুকে ভয় করেন না।