নতুন ধরনের করোনাভাইরাসের আতঙ্কে বৃটেন থেকে ফ্লাইট নিষিদ্ধ করেছে ৪০টিরও বেশি দেশ। এ বিষয়ে অভিন্ন নীতি গ্রহণে বৈঠক করেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)। এ ছাড়া, বৃটেনের সীমান্তে আটকে আছে পণ্যবাহী ট্রাকগুলো। ফলে খাদ্য সংকটে পড়ার আশঙ্কায় রয়েছে দেশটি। শুধুমাত্র ফ্রান্সের সঙ্গেই প্রতিদিন হাজার হাজার ট্রাক চলাফেরা করে বৃটেনের। তবে সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় এখন সরবরাহ চেইন ভেঙে পড়বে এমন আশঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। এটি হলে খাদ্য সংকটে পড়বে বৃটেন।
এরই মধ্যে বৃটেনের করোনাভাইরাস নিয়ে আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
নতুন ধরনের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়ার কারণে ডেনমার্ক থেকে বিদেশিদের সফরে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সুইডেন। মূল করোনাভাইরাসের মতো ভয়াবহ না হলেও রূপান্তরিত করোনাভাইরাস অধিক সংক্রামক। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি বিভাগের প্রধান মাইক রায়ান বলেছেন, নতুন করোনাভাইরাসের বিবর্তন একটি মহামারিতে স্বাভাবিক ঘটনা। তবে এটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে নয়। তার শেষের এই মন্তব্যটি বৃটিশ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ম্যাট হ্যানককের মন্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কারণ, ম্যাট হ্যানকক রোববার এই সংক্রমণকে নিয়ন্ত্রণের বাইরে বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভ্রমণকারীরা কিছু দেশে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছেন। এর কারণ, সেখানেও নতুন এক রকম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। তবে সেটার সঙ্গে বৃটেনের রূপান্তরিত করোনাভাইরাসের কোনো সম্পর্ক নেই।
বৃটেনের করোনাভাইরাস সংক্রমণ বন্ধে ইইউয়ের বেশির ভাগ দেশ বৃটেন থেকে ফ্লাইটের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবে সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বিভিন্ন দেশের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন। এতে বৃটিশ জনজীবনে সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়েছে ফ্রান্সের নিষেধাজ্ঞায়। বৃটেন থেকে যাত্রীবাহী এবং ফ্রেইট নিষিদ্ধ করেছে ফ্রান্স। ফলে বৃটেনের দক্ষিণাংশে গুরুত্বপূর্ণ বন্দর ডোভারে মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। লরিগুলোর দীর্ঘ লাইন চোখে পড়েছে। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, তিনি বাণিজ্য সচল রাখার জন্য ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনের সঙ্গে কাজ করছেন। তিনি আশা করেছেন, এ সমস্যা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমাধা হয়ে যাবে। ফরাসি পরিবহনমন্ত্রী ক্লেমেন্ট বিউনি বলেছেন, গতকালই তার দেশ ঘোষণা করেছে, তারা যে ৪৮ ঘণ্টার ভ্রমণ ও লরির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন, তারপরে কি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বৃটেনে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ২৭ জাতির সংগঠন ইইউ সমন্বিতভাবে কি সমাধান নিতে পারে তা নিয়ে আলোচনা চলছিল। তবে সেই আলোচনার কোনো ফল পাওয়া যায়নি। গতকাল এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। তবে একটি বিষয় গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাতে বৃটেন থেকে কোনো ব্যক্তি ইইউ’র কোনো দেশে গেলে তার করোনা নেগেটিভ রিপোর্ট থাকতে হবে বলে দাবি করা হয়েছে। সোমবার ফাইজার-বায়োএনটেক আবিষ্কৃত করোনাভাইরাসের টিকা অনুমোদন দিয়েছে ইইউ’র মেডিসিন বিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
আপনার মতামত দিন