সাইফুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টারঃ টাঙ্গাইল সদর উপজেলার বিল মাগুড়াটা গ্রামে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে অন্য মেয়েকে বিয়ে করায় প্রেমিকের বউ ভাতের অনুষ্ঠানে শনিবার থেকে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেছেন প্রেমিকা।
এদিকে জানা গেছে, প্রেমিক আব্দুর রহমান একজন এনজিও কর্মী। তিনি ওই গ্রামের রমজান আলীর ছেলে ও ব্যুরো বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ শাখার ফিল্ড অফিসার। আব্দুর রহমানের পরিবারের লোকজন ওই মেয়েটিকে বেধড়ক মারধর করেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, আব্দুর রহমান ছুটিতে এসে গেল শুক্রবার (১৮ ই ডিসেম্বর) সদর উপজেলার পয়লা গ্রামে বিয়ে করেন। রাতে বাসর করে গতকাল শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) তার বাড়িতে বউভাতের আয়োজন করে। এরই মধ্যে বিয়ের খবর শুনে বিয়ের দাবিতে আব্দুর রহমানের বাড়িতে অনশন শুরু করে প্রেমিকা। এরপরে তার পরিবারের লোকজন প্রেমিকাকে বেধড়ক মারধর করেছেন। দুপুরে পয়লা গ্রামের মেয়ে পক্ষের লোকজন দাওয়াত খেতে এসে তার প্রেমিকাকে অনশন করতে দেখে বিব্রত হন। আর বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হওয়ায় এলাকায় সমালোচনার ঝড় বইছে।
শনিবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে আব্দুর রহমানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বিয়ের আয়োজন চলছে। উঠানের তাবু টাঙানো। চেয়ার টেবিল বসানো আছে। অনেকেই দুপুরের খাবার খেয়েছেন। পয়লা গ্রামের আত্মীয়রাও খাবার খেয়ে বাড়ির পাশে রোদে দাঁড়িয়ে আছেন। তবে আব্দুর রহমান ও তার পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি।
আব্দুর রহমানের প্রেমিকা জানান, তাদের দুজনের বাড়ি একই গ্রামের দুপাশে। ৭ বছর আগে থেকে তারা শহরের একটি কাটিং সেন্টারে চাকরি শুরু করে। চাকরির সুবাদে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রেমের পর আব্দুর রহমানকে অনেক টাকা দিয়েছেন তিনি। আব্দুর রহমানের বোন জামাই বিদেশ যাওয়ার সময়ও সে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। এক বছর আগে ফিল্ড অফিসার পদে আব্দুর রহমানের ব্যুরো বাংলাদেশে চাকরি হয়। এরপরে সে নারায়ণগঞ্জে চলে যায়। তার পরও তাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হয়। গত বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) আব্দুর রহমান তাকে ফোন করে তাকেই বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে শুক্রবার বিয়ে করার পর শনিবার সকালে তিনি বিষয়টি জেনে তার বাড়ি অনশন শুরু করে। পরে তার পরিবারের লোকজন তাকে বেধড়ক মারধর শুরু করে। স্থানীয়ারা এসে তাকে উদ্ধার করে। এলাকার মাতব্বররা সমাধানের আশ্বাস দিয়ে তাকে চিকিৎসা নিতে বলে। সে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে।
প্রেমিকা আরও বলেন, আমার পৃথিবীতে মা-বাবা কেউ নাই। আমার অন্যত্র বিয়ে আসলে আব্দুর রহমান আমাকে বিয়ে করতে দেয়নি। সে আমাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আমার কাছ থেকে অনেক টাকা নিয়েছে সে। বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতেও গিয়েছি। দুজনের সঙ্গে অনেক কিছুই হয়েছে। কিন্তু আমাকে রেখে সে গোপনে অন্যত্র বিয়ে করছে। আব্দুর রহমান আমাকে বিয়ে না করলে আত্মহত্যার মতো আমি যেকোনো ধরণের দুর্ঘটনা ঘটাবো।
আর এ বিষয়ে আব্দুর রহমানের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় মাতব্বররা জানান, বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা চলছে। তবে স্থানীয় ইউপি সদস্য ছোরমান মিয়া বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানান।
গালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজকুমার জানান, বিষয়টি তিনি শুনেছেন।