করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবেলায় নতুন করে কড়াকড়ি ঘোষণা করেছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। রাজধানী লন্ডনসহ সাউথ ইস্ট এবং ইস্ট অব ইংল্যান্ডে বাধানিষেধের টিয়ার ৪ ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের একটি রূপান্তরিত রূপ এখন সংক্রমিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এটি মোকাবেলায় আগামী কাল সকাল থেকেই নতুন লকডাউনের ঘোষণা কার্যকরি হবে। পূর্ব নির্ধারিত এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন এই পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের নতুন একটি রূপান্তরিত রূপ ছড়িয়ে পড়ছে। এটি যে হারে ছড়িয়ে পড়ছে তা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। ভাইরাস যেহেতু তার আক্রমণের ধরণ পাল্টেছে তাই আমাদেরকেও এখন প্রতিরোধের ধরণ পাল্টাতে হবে। বক্তব্যে বরিস জনসন বলেন, নতুন বাধানিষেধের আওতায় থাকা এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের অবশ্যই নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করতে হবে।
জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোনো ধরণের কার্যক্রম চালু থাকবে না। মানুষ অকারণে বাসার বাইরেও যেতে পারবে না। মানুষকে বাসায় বসে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন বরিস জনসন। তবে নির্মান শ্রমিক ও এ খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কর্মক্ষেত্রে যাওয়ায় কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকছে না। টিয়ার ৪ যেসব এলাকায় ঘোষণা করা হয়েছে সেখানে বাইরে থেকে প্রবেশ না করার আহবান জানিয়েছেন বরিস জনসন। এই কড়াকড়ি দুই সপ্তাহের জন্য ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ৩০শে ডিসেম্বর এটি আবারো পর্যালোচনা করে দেখা হবে।
তবে এর আগে টিয়ার ৪ লকডাউন চলাকালীন সবার জন্য স্টে হোম অর্ডার জারি থাকবে। ঘোষণায় বৃটিশ নাগরিকদের ভ্রমণ না করার আহবান জানিয়েছেন বরিস জনসন। টিয়ার ৪ লকডাউন চলা এলাকায় প্রবেশ করা যাবেই না। অন্যান্য এলাকার ক্ষেত্রেও স্থানীয় পর্যায় ছাড়া ভ্রমণ না করার কথা বলেছেন তিনি। এছাড়া, জরুরি কাজ না থাকলে বিদেশ সফর না করার আহবান জানিয়েছেন তিনি।
বড়দিনে বাসার বাইরে কোনো উৎসব বা সমাবেশ করা যাবেনা বলে ঘোষণায় জানিয়েছেন বরিস জনসন। তবে পারিবারিকভাবে দিনটি উৎযাপন করার কথা বলেছেন তিনি। এ সুযোগ থাকছে না নববর্ষের জন্য। থার্টি ফার্স্ট নাইটেও অন্যান্য দিনের মতো কড়াকড়ি জারি থাকবে। বরিস জনসন বলেন, আমি জানি মানুষ বড়দিনে কত আগ্রহ নিয়ে বসে থাকে পরিবার পরিজন নিয়ে উৎসব করার জন্য। এদিনটি নষ্ট হয়ে যাওয়া কতখানি হতাশার তা আমি জানি। তবে আমাদেরকে এখন অবশ্যই বিজ্ঞানভিত্তিক চিন্তা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমার কাছে আর কোনো বিকল্প নেই। এবারের বড়দিন ভিন্ন হবে কারণ আমাদের বাস্তববাদি হওয়া জরুরি। এবারের বড়দিনে যদি আমরা ধৈর্য্যের পরিচয় দিতে পারি তাহলে ভবিষ্যতের বড়দিন আরো মধুর হবে।
বক্তব্যের শেষে বরিস জনসন বৃটিশ নাগরিকদের ভ্যাকসিন গ্রহণের আহবান জানান। তিনি বলেন, বৃটেন পৃথিবীর প্রথম রাষ্ট্র হিসেবে ভ্যাকসিন নিশ্চিত করেছে। তাই যখন এনএইচএস কর্মীরা আপনাকে ফোন করবে, আপনারা ভ্যাকসিন গ্রহণ করবেন। এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৫০ হাজার মানুষ তাদের ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছে বলেও জানান তিনি।