হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাটঃ লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার ৪ নং দলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ বর্মন সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্যদেরকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে তার নিজ কক্ষ থেকে বেড় করে দিয়েছেন। চেয়ারম্যান’র এহেন আচারণে ক্ষুদ্ধ হয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন সংরক্ষিত মহিলা সদস্যরা।
বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে উপজেলার দলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ওই দিন রাত ১০ টার দিকে সংরক্ষিত ওয়ার্ড মেম্বার রোজিনা বেগম, ইনছেনা বেগম ও অনিতা রানী জেলাপ্রশাসক বরাবর সুবিচারের জন্য একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যার অনুলিপি উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং মহিলা বিষায়ক কর্মকর্তা কে দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে সুত্রে জানা যায়, ৪ নং দলগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান খ. ম শফিকুল আলম মৃত্যুবরন করার পর সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ ইউনিয়নে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত নির্বাচনে স্বতন্ত্র থেকে রবীন্দ্রনাথ বর্মন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে গত ১৮ নভেম্বর শপথ গ্রহন করেন। শপথ গ্রহনের পর তিনি ইউপি সদস্যগনের সাথে খারাপ আচরন করে আসছিলেন।
এমতাবস্থায় গত ১৭ ডিসেম্বর বিকেল ৩ ঘটিকায় সংরক্ষিত মহিলা সদস্যা রোজিনা বেগম,ইনছানা বেগম ও অনিতা রানী চেয়ারম্যানের কক্ষে প্রবেশ করেন এসময় কক্ষে বসা ছিলেন ১ নং ওয়ার্ডের সদস্য ফারুক হোসেন,দফাদার বীরমুক্তিযোদ্ধা সদানন্দ বর্মন ৫ নং ওয়ার্ড সদস্য শাফিয়ার রহমানের সামনে মহিলা সদস্যদের কোন এক প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান মহিলা সদস্যদের উপর চড়াও হয়ে বলেন এতে তোমাদের কি হয়েছে বলেছি আরও বলবো কি করার আছে করিও। মহিলা সদস্যরা এর কারন জানতে চাইলে চেয়ারম্যান তাদের কে বেয়াদব মহিলারা, ফালতু কোথাকার, তোমাদের কে এই মহুর্তে সাসপেন্ড করবো। কাল থেকে যেন পরিষদের বাউন্ডারিতে তোমাদের না দেখি,এই মহুর্তে রুম থেকে বাহির হয়ে যাও তা না হলে তোমাদের ঘার ধরে বের করে দিবো। এছাড়াও তিনি এমন অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে যা ভাষায় প্রকাশ করা যাচ্ছে না। এক পর্যায় চেয়ারম্যান মহিলা সদস্যদের মারার জন্য উদ্ধ্যত হন।
চেয়ারম্যানের রুমে এমন তর্কবিতর্ক শুনে বাহির হইতে কয়েকজন ইউপি সদস্যসহ নাম না জানা অনেকেই চেয়ারম্যানের রুমে গিয়ে মহিলা সদস্যদের সাথে এমন আচরনের জন্য চেয়ারম্যান কে ধিক্কার জানান।
শুধু তাই নয় তিনি গত ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে পরিষদ প্রাঙ্গনে আলোচনা সভায় বক্তব্য প্রদানকালে ৩০ লক্ষ শহীদের পরিবর্তে ৭ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে একাধিক মহিলা সদস্যরা জানান, আমরা আমাদের বক্তব্য লিখিত ভাবে যা বলেছি আমাদের বক্তব্য সেটাই।
এ বিষয় ইউপি চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ বর্মনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার বিষয়ে যা লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যে। তিনি আরো বলেন, আমি নিজেও জেলা প্রশাসক বরাবর একটা লিখিত অভিযোগ করেছি। এ বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি একেক সময় একেক কথা বলেন। কখনো বলেন,অনুলিপি, স্বারক পত্র, কখনো বা অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানান। এমনকি সাংবাদিকে তিনি বলেন প্যাচ করবেন না।
অভিযোগের বিষয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার রবিউল হাসানের নিকট জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান,তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।