নিজস্ব প্রতিনিধি গাজীপুর:গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ১৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৫৩ জন শিক্ষককের চাঁদার টাকায় দামি শাড়ি, গহনা উপহার টাকা উৎস জানতে কারণ দর্শানোর নোটিশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
চিঠিতে উল্লেখ্য করা হয়েছে এমতাবস্থায় আপনার উক্ত বর্ণিত দুর্নীতি ও অনিয়মের জন্য, কেন আপনার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৮৯ অনুযায়ী কতৃক ও সরকারের পূর্বানুমতি ব্যতিয়েকে বিধি ৫ (১) উপহার গ্রহণ বিধি ৭(২) সরকারী কর্মকর্তার সম্মানে গণজমায়েত, এবং বিধি (৯) চাঁদা আদায়ের কারণে সরকারি কর্মচারী (শৃংখলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৩ (খ) ও (ঘ) ধারা মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য, উর্ধতন কতৃপক্ষের বরাবর কেন সুপারিশ করা হবে না। তার জন্য সন্তোষজনক জবাব আগামী (৭) সাত কর্মদিবসের মধ্যে নির্মস্বাক্ষরকারীর দপ্তরে প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য শনিবার দুপুরে শ্রীফলতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের সংর্বধনা অনুষ্ঠানে এ উপহার দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, গত ১৭ মার্চ থেকে সারা বাংলাদেশে মহামারি করোনায় সরকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করলেও কালিয়াকৈর উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তা রমিতা ইসলাম জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০১৯ জাতীয় শ্রেষ্ঠ উপজেলা শিক্ষা অফিসার নির্বাচিত হওয়ায় শনিবার দুপুরে সৈয়দপুর ক্লাস্টারের আয়োজনে তাকে সংর্বধনা দেওয়া হয়েছে।
এসময় উপজেলার শিক্ষা অফিসার রমিতা ইসলামকে একটি দামী শাড়ি, গহনা, তার স্বামীর জন্য একটি স্যুট-প্যান্ট ও ছেলের জন্য শার্ট-প্যান্ট ও ক্রেস্ট প্রদান করেন। এর আগেও আরও চারটি ক্লাস্টারের মাধ্যমে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। সংর্বধনা অনুষ্ঠানের আর্থিক যোগানের জন্য সৈয়দপুর ক্লাস্টারের ১৯টি বিদ্যালয়ের ১৫৩ জন শিক্ষকদের কাছ থেকে এক হাজার টাকা করে মোট এক লাখ তেপ্পান্ন হাজার টাকা চাঁদা তুলে এ সংর্বধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
সংর্বধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন রমিতা ইসলাম। আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার জাহাঙ্গীর আলম, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার শাহিদুল আলম, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ফারহান বেগম, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আলমগীর হোসেন, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার দিলারা রহমান, শিক্ষা অফিসের উচ্চমান সহকারী উত্তম কুমার দাসসহ বিভিন্ন শিক্ষকবৃন্দ।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষক জানান, কি করবো শিক্ষা কর্মকর্তাকে খুশি করার জন্য আমরা এক হাজার টাকা চাঁদা দিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান করেছি।
এবিষয়ে কালিয়াকৈর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রমিতা ইসলামকে বার বার মোবাইল যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।
গাজীপুর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোফাজ্জল হোসেন জানান, দুর্নীতির বিষয়টি আমাদের উর্ধতন কতৃপক্ষ দেখছেন।
প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. ইফতেখার হোসেন ভূইয়া জানান, বিভিন্ন মিডিয়ার সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি আমাদের নজরে এলে, প্রাথমিক ভাবে তাকে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ পাঠানো হয়েছে। এর যথাযথ উত্তর না পেলে বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে বিভাগীয় মামলা করা ।