হাসানুজ্জামান হাসান,লালমনিরহাটঃ লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় একই পরিবারে তিন বুদ্ধি ও শারীরিক প্রতিবন্ধী সদস্য নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র, অসহায় বৃদ্ধ আজিমউদ্দিন।
কিন্তু নেই চিকিৎসার অর্থ। আর সেটা থাকারও কথা নয়।দরিদ্র, অসহায় পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম চল্লিশোর্ধ্ব ব্যক্তিটি রিক্সা চালিয়ে ৮ জনের পরিবার চালিয়ে ৩ জনের চিকিৎসা করার কথা কল্পনাও করতে পারেন না।
উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পুর্ব সাড়ডুবি এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডের প্রবীণ বাসিন্দা আজিমউদ্দিন (৭৫)।কিছুদিন আগেও দিনমজুরের কাজ করে সংসারের হাল ধরে রাখলেও বয়সের ভাড়ে কর্মক্ষমতা হারান।তাই কেউ আর কাজেও নেয়না।এজন্য ৮ জনের পরিবারের হাল ধরতে হয় বৃদ্ধ আজিমউদ্দিন এর বড় ছেলে আবদুর রাজ্জাক মিন্টু (৪০)।মিন্টু ঢাকায় ভাড়ায় রিক্সা চালিয়ে সংসার চালায়।
দীর্ঘদিন থেকে মাথার সমস্যায় ভুগছে বৃদ্ধ আজিমউদ্দিন এর ছোট ছেলে আশরাফুল আলম (৩৩) অপরদিকে বড় ছেলে মিন্টুর ২ টি ছেলে সাইফুর রহমান (১৩) জন্ম থেকে সব সময় চিৎকার করে, ঘাড় নাড়ে, মাটিতে গড়াগড়ি করে আর কিছুই খেতে চায় না এবং এক ছেলে রহমত (৫) চোখের সমস্যায় এক দিকে তাকিয়ে থাকে।
একবছর আগে লালমনিরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন(এমপি)’র দেয়া ৩০,০০০ টাকা দিয়ে ৩ শতক জমির উপর একটি চালা ঘর নির্মাণ করে পরিবারের ৮ সদস্য নিয়ে দিনাতিপাত করছে বৃদ্ধ আজিমউদ্দিন।কিন্তু সেই ঘরের অবস্থাও এখন জীর্ণশীর্ণ।আজিমউদ্দিন জানান এখন সংসার চালানো ও অসুস্থদের চিকিৎসা করার মতো সামর্থ্য নেই তার।
এক প্রশ্নের উত্তরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন বৃদ্ধ আজিমউদ্দিন।কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমাদের বেঁচে থেকে কোন লাভ নেই। এতো কষ্টের চাইতে মরে যাওয়াই অনেক ভালো।অসুস্থ ৩ জনের চিকিৎসা করা তো দূরের কথা, ডাক্তারকে ভিজিট দিব সে টাকাই তো আমার নেই।বড় ছেলে মিন্টু অন্যের রিক্সা ভাড়ায় চালিয়ে সামান্য যে টাকা আয় করে তা দিয়ে সংসারই চলে না।পড়নের কাপড় নেই।এরপরে আমি তাদের চিকিৎসা করব কিভাবে”।
আজিমউদ্দিন নিজের জন্য কিছু ভাবেন না। তার যত ভাবনা সব বাকি সদস্য ও অসুস্থ তিনজনকে নিয়ে। তিনি বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বিত্তবানদের প্রতি অনুরোধ জানান তার পরিবারের পাশে দাড়ানোর জন্য।মৃত্যুর আগে তিনি তার পরিবারের সদস্যদের মুখে হাসি দেখতে চান এটাই তার শেষ ইচ্ছা।
এ বিষয়ে বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মাসুম আলী জানান, ওই পরিবারটিকে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সহযোগিতা করা হচ্ছে।কিন্তু পারিবারের ৩ জন সদস্যের চিকিৎসার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বিত্তবানরা যদি সহযোগিতা করেন তাহলে হয়তো অসহায় পরিবারটির অসুস্থ সদস্যদের চিকিৎসা হবে।