চট্টগ্রাম: ধর্ষণ মামলায় কারাবন্দি ছিলেন সুজন দাশ। চট্টগ্রাম মহানগরী এনায়েত বাজার এলাকার বাদল দাশের ছেলে সুজন। ২৪ দিন পর বিয়ের প্রস্তাবে কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পান। কিন্তু পরে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান সুজন। তাতে রাগে ক্ষোভে অপমানে আত্মহত্যা করেন ধর্ষণের শিকার কিশোরী প্রমি দাশ (১৯)। গতকাল সকালে এমন তথ্য জানান চট্টগ্রাম মহানগরীর ডবলমুরিং থানার ওসি সুদীপ কুমার দাশ। তিনি জানান, প্রমি দাশের লাশ এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে তার লাশ পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হবে।
তিনি আরো জানান, প্রমি দাশ আত্মহত্যা করেছেন বলে জানান তার মা। তিনি গার্মেন্টে চাকরি করেন। চাকরি শেষে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফিরে প্রমিকে ডাকাডাকি করেন। কোনো সাড়া না পেয়ে রুমের দরজা খুলে ফ্যানের সঙ্গে ওড়নায় প্যাঁচানো অবস্থায় প্রমির ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান।
এ সময় চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন এসে প্রমির লাশ নামিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে
নিয়ে যান। সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। সেখান থেকে খবর পেয়ে প্রমির লাশ উদ্ধার করা হয় বলে জানান ওসি সুদীপ কুমার দাশ।
তিনি জানান, ঘটনার সময় প্রমি বাসায় একা ছিল। পরিবারের অন্য সদস্যরাও কাজে বাইরে ছিলেন। ফাঁকা বাসার একটি রুমে আত্মহত্যা করে প্রমি। তবে এটা কি আসলেই আত্মহত্যা, না কি অন্য কোনো ঘটনা রয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। প্রমির মা ও তার দুলাভাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
প্রমির দুলাভাই জানান, দু’মাস আগে ধর্ষণের শিকার হয় প্রমি। এ ঘটনায় গত ৭ই অক্টোবর চট্টগ্রাম মহানগরীর এনায়েত বাজার এলাকার বাদল দাশের ছেলে সুজন দাশের বিরুদ্ধে খুলশী থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলায় ২৪ দিন জেলও খেটেছে সুজন। তখন সুজনের পরিবারের চাপ ও বিয়ের প্রস্তাবে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়। সমঝোতার সম্মতির কারণে জেল থেকে বেরিয়ে আসে সুজন।
এরপর ২৬শে ডিসেম্বর তাদের বিয়ে ঠিক হয়। এর মধ্যে সুজনের এক আত্মীয় মারা যান। এটার অজুহাতে তার পরিবার বিয়ে পেছানোর কথা বলে। এদিকে সুজন বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দেয় প্রমি ও তার মাকে। প্রমিকে অনেক টর্চার করেছে সে। সইতে না পেরে প্রমি আত্মহত্যা করেছে।
এ বিষয়ে জানার জন্য সুজন ও তার পরিবারের দু’টি ফোন নাম্বারে একাধিকবার কল করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
চট্টগ্রামে আরেক কিশোরীর আত্মহত্যা: চট্টগ্রাম মহানগরীর খুলশী থানাধীন নিউ ঝাউতলা এলাকায় নিজ বাসায় আত্মহত্যা করেছেন সানজিদা আক্তার মিশু (১৬) নামে আরেক কিশোরী। গতকাল দুপুরে ঝুলন্ত অবস্থায় ওই কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
মোবাইলে ইউটিউব দেখা নিয়ে ছোট বোনের সঙ্গে ঝগড়ার কারণে বাবার বকাঝকার পর গলায় ওড়না প্যাঁচিয়ে সে আত্মহত্যা করে। সানজিদা আক্তার মিশু ওয়ারর্লেস কলোনি স্কুলের ৯ম শ্রেণির ছাত্রী বলে জানান খুলশী থানার ওসি মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামান।
ওসি মোহাম্মদ শাহিনুজ্জামান বলেন, মিশুর বাবা মাহফুজ ও মা জানিয়েছেন রাতে মোবাইলে ইউটিউব দেখা নিয়ে ছোট বোনের সঙ্গে মিশুর ঝগড়া হয়। তখন তাকে বাবা বকা দেয়। অভিমান করে রাতে রুমে ঢুকে সে গলায় ওড়না প্যাঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।
লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান ওসি শাহিনুজ্জামান।