করোনাভাইরাসের উৎপত্তির জন্য কয়েকজন চীনা বিজ্ঞানীর পক্ষ থেকে বাংলাদেশ, ভারতসহ আরও কয়েকটি দেশকে দায়ী করার যে খবর গণমাধ্যমে এসেছে তা ‘ভুয়া’ বলে উল্লেখ করেছেন ঢাকাস্থ চীনা দূতাবাসের ডেপুটি চিফ অফ মিশন হুয়ালং ইয়ান। রোববার তিনি তার ফেসবুক আইডিতে ‘ফেক নিউজ’ ক্যাপসন লিখে ওয়াইঅন নিউজের একটি সংবাদ শেয়ার করেছেন। ‘চীনা বিজ্ঞানীদের দাবি ২০১৯ সালের গ্রীষ্মে ভারত থেকে করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি’ এই শিরোনামের সংবাদে চীনা বিজ্ঞানীদের দাবির বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে।
হুয়ালং ইয়ান প্রথম স্ট্যাটাস দেয়ার ছয় ঘণ্টা পর রোববার বিকালে বাংলায় অন্য একটি স্ট্যাটাস দেন। এতে তিনি বলেন, ‘এটা সবার জানা যে বাংলাদেশ বিশ্বের সর্বশেষ দেশগুলির মধ্যে একটি ছিল যার প্রথম কোভিড কেস নিশ্চিত করা হয়েছে শুধুমাত্র ২০২০ মার্চ, ২০২০ এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণা দেখিয়েছে যে এটি গৃহবাহিত কেস পরিবর্তে আমদানিকৃত। কিভাবে তিনি ভাইরাস সম্ভাব্য উৎপত্তি দেশ হতে পারে?!’
প্রকাশনা সংস্থা এলসিভিয়ারের মালিকানাধীন প্রি-প্রিন্ট সার্ভার সোশ্যাল সায়েন্স রিসার্চ নেটওয়ার্ক (এসএসআরএন)-এ প্রকাশিত একটি গবেষণা নিবন্ধে চাইনিজ অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে উহানে প্রথম যে সংক্রামক করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়, তার মিউটেশন বেশি ছিল। ওই নমুনার চেয়েও কম মিউটেশনের ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে আটটি দেশে: বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, গ্রিস, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইতালি, চেক রিপাবলিক, রাশিয়া এবং সার্বিয়া। সর্বকোষীয় ভাইরাস পুনরুৎপাদনের জন্য প্রাকৃতিকভাবে নিজেদের পরিবর্তন করে।
এর অর্থ তাদের ডিএনএ’তে প্রতিবার ছোট ছোট যে পরিবর্তন হয়, তার মাধ্যমে তারা নিজেদের প্রতিলিপি তৈরি করে। এই যুক্তিকে সামনে এনে চীনা বিজ্ঞানীরা বলেন, সবচেয়ে কম পরিবর্তন বা মিউটেশনের নমুনা শনাক্ত করে ভাইরাসের ‘আসল ভার্সন’ পাওয়া যাবে।
তাদের দাবি, ভারত এবং বাংলাদেশে যে স্ট্রেইন পাওয়া গেছে, তাতে অনেক কম মিউটেশন। মানে সেখান থেকে আগে ছড়িয়ে থাকতে পারে। দুটি দেশ যেহেতু ভৌগোলিকভাবে পাশাপাশি তাই এই মহাদেশে সম্ভাবনা বেশি দেখছেন তারা। যে আটটি দেশের কথা বলা হচ্ছে, এর মধ্যে আবার বাংলাদেশ-ভারতকে সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হচ্ছে। চীনা বিজ্ঞানীদের এমন দাবি প্রমাণ করা কঠিন বলে মত দিয়েছেন বাংলাদেশ এবং ভারতের বিশেষজ্ঞরা। যদিও এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোন প্রতিক্রিয়া আসেনি।