ঢাকা: বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্য। শুক্রবার দেশটির পররাষ্ট্র, কমনওয়েলথ এবং উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকাশিত প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়। বাংলাদেশসহ ৩০টি দেশের এ বছরের প্রথম ছয় মাসের (জানুয়ারি থেকে জুন) মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাজ্যের পর্যালোচনা প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছে। উত্তর কোরিয়া, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, মিয়ানমার, সোমালিয়া, সুদানের মতো দেশও উক্ত ৩০ দেশের তালিকায় রয়েছে।
বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ সালের প্রথম ছয় মাসে কমপক্ষে ১৫৮টি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব হওয়াও অব্যাহত রয়েছে। কমপক্ষে ৩৮ জন সাংবাদিক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক হয়েছেন।
করোনা মোকাবেলায় সরকারি উদ্যোগের সমালোচনা করায় স্বাস্থ্যকর্মী, পেশাজীবী এবং অন্যান্য সমালোচক সহ চার শতাধিক ব্যক্তিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক করা হয়েছে। ছয় মাসের জন্য সাজার মেয়াদ স্থগিত করার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে মার্চে বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া কারাগার থেকে মুক্তি পান।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ফেব্রুয়ারিতে ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বিরোধীদলীয় এক প্রার্থীর ওপর হামলা এবং ভোটারদের ব্যাপক ভয়ভীতি প্রদর্শনে কালিমালিপ্ত ছিল। ওই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করায় সরকার যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য কূটনৈতিক মিশনের সমালোচনা করে।
প্রতিবেদনে মনে করিয়ে দেয়া হয়, “আমরা উদ্বেগের জায়গাগুলোকে অগ্রাধিকার দিই, কিন্তু যেখানে অগ্রগতি হয়েছে সেখানকার ইতিবাচক উন্নয়নগুলো প্রতিফলনের চেষ্টাও করি।” বাংলাদেশের প্রশংসা করে বলা হয়, “কক্সবাজারে প্রায় আট লক্ষ ষাট হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়া অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ।
গত এপ্রিল ও মে মাসে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান রোহিঙ্গা বহনকারী কয়েকটি নৌকা উদ্ধার করেছে। কিছু শরণার্থীকে ভাসানচরে নেয়া হয়েছে।”
“ভাসানচরে সুরক্ষা ও সুবিধাগুলো পর্যালোচনার লক্ষ্যে স্বাধীন ও সমন্বিত কারিগরি এবং সুরক্ষা বিষয়াদি মূল্যায়নের জন্য যুক্তরাজ্য সহ অংশীদাররা আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছে। কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরগুলোতে ইন্টারনেট সুবিধায় বিধি-নিষেধ অব্যাহত রয়েছে। যার ফলে করোনা বিষয়ক জনস্বাস্থ্যসেবা প্রদান এবং মানবিক সহায়তা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।’