মোজাম্মেল আলম ভূঁইয়া, হাওরাঞ্চল প্রতিনিধি,সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জ সীমান্তে চোরাই কয়লা নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রাম্য সালিশ চলাকালীন সময় রাজস্ব বিহীন ২ মে.টন অবৈধ কয়লা আটক করেছে বিজিবি। এঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায় ১৪.১১.২০ইং শনিবার সকাল ১০টায় জেলার তাহিরপুর উপজেলার চারাগাঁও সীমান্তের লালঘাট ফুটবল খেলার মাঠে গ্রাম্য সালিশ বসায় বিজিবির সোর্স পরিচয়ধারী ও চোরাই কয়লা ব্যবসায়ীরা। দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে সালিশ বিচার কার্যক্রম। গত শনিবার রাত ৭টায় বিজিবি অধিনায়কের সোর্স পরিচয়ধারী রমজান মিয়া,শফিকুল ইসলাম ভৈরব ও ইয়াবা কালাম মিয়া তাদের সিন্ডিকেডের চিহ্নিত চোরাই কয়লা ব্যবসায়ী শহিদুল্লা, খোকন মিয়া,বাবুল মিয়া,জসিম মিয়া,হারুন মিয়া ও জানু মিয়াকে নিয়ে বাঁশতলা,লালঘাট ও লাকমা এলাকা দিয়ে পৃথক ভাবে ভারত থেকে কয়লা ও মাদক পাচাঁর করার সময় বিজিবি সদস্যরা লালঘাটের ১১৯৬পিলার সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৬ বস্তা কয়লা জব্দ করে। পরে শ্রমিক আব্দুল আলী ভান্ডারীকে দিয়ে জব্দকৃত চোরাই কয়লা চারাগাঁও ক্যাম্পে নিয়ে যায় বিজিবি। এঘটনার প্রেক্ষিতে রাত ৮টায় চোরাই কয়লা ব্যবসায়ী শহিদুল্লা,খোকন মিয়া,রমজান মিয়া,জানু মিয়া ও বাবুল মিয়া তাদের চোরাই কয়লার বাহিনী নিয়ে বিজিবির পরিবহণ শ্রমিক আব্দুল আলী ভান্ডারীর বাড়িতে গিয়ে হামলা চালায়। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ৭জন আহত হয়। এই সংঘর্ষের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আজ দুপুরে সালিশের মাধ্যমে গ্রাম্য মাতাব্বররা বিজিবির পরিবহণ শ্রমিক আব্দুল আলী ভান্ডারীকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করেছে। আর সালিশ-বিচার চলাকালীন অন্যদিকে দুপুর ২টায় বিজিবি অভিযান চালিয়ে লালঘাট গ্রামের চোরাচালানী হারুন মিয়া ও জসিম মিয়ার বাড়ির চারদিকে লুকিয়ে রাখা ২মে.টন চোরাই কয়লা জব্দ করে। তার আগে বিশিস্ট চোরাই কয়লা ব্যবসায়ী শহিদুল্লার বাড়ির পাশে লুকিয়ে রাখা ২মে.টন চোরাই উদ্ধার করেছে। কিন্তু চোরাই কয়লার মালিকদের নামে মামলা হয়নি। তবে সোর্সদের পাচাঁরকৃত বিপুল পরিমান অবৈধ কয়লা ও মাদকদ্রব্য লালঘাট,বাঁশতলা ও লাকমা গ্রামের বিভিন্ন বাড়িঘর ও চারপাশে লুকানো রয়েছে।
এছাড়া গত ৪ মাসে সীমান্তের লামাকাটা,জংগলবাড়ি,বাঁশতলা,লালঘাট,লাকমা ও টেকেরঘাট এলাকা দিয়ে সোর্স পরিচয়ধারী ও চিহ্নিত চোরাই কয়লা ব্যবসায়ীরা প্রায় কোটি টাকার কয়লা ও মাদক পাঁচার করে নেত্রকোনা জেলার কমলাকান্দা উপজেলা সদরের মনতলা নিয়ে বিক্রি করেছে। তবে লালঘাটের সংঘর্ষের ঘটনার পর থেকে সীমান্ত এলাকায় বিজিবি তৎপরতা বৃদ্ধি করার কারণে ভারত থেকে অবৈধভাবে কয়লা পাচাঁর বন্ধ রয়েছে বলে জানাগেছে।
এব্যাপারে টেকেরঘাট পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই আলাউদ্দিন বলেন- লালঘাটের সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রাম্য সালিশ হওয়ার খবর পেয়েছি,তবে সমাধান হয়নি বলে জানতে পেরেছি। কয়লা উদ্ধারের ব্যাপারে চারাগাঁও বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার মালেকের সরকারি মোবাইল নাম্বার রিসিভ না করার কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।