কালীগঞ্জে মুয়াজ্জিন স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর মামলা!

রংপুর

হাসানুজ্জামান হাসান,ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট,লালমনিরহাটঃ যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগে গত ২০১৯ সালের ২৪ জুন স্ত্রী আকতারা বেগম (২৪) বাদী হয়ে লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার উত্তর মুসরত মদাতী এলাকার ইয়াছিন আলী মুয়াজ্জিন (স্বামী)সহ ৫ জনকে আসামী করে লালমনিরহাট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।

আসামীরা হলেন, কালীগঞ্জ উপজেলার মদাতী ইউনিয়নের উত্তর মুসরত মদাতী এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে ইয়াছিন আলী, মৃত আসকার আলীর ছেলে দেলোয়ার হোসেন, দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে সাবিনা বেগম, নুর ইসলামের ছেলে আশরাফুল ইসলাম এবং উপজেলার সুন্দ্রাহবি এলাকার মৃত আঃ গফুরের ছেলে নিলু মিয়া।

বর্তমানে মামলার ২ নং আসামী দেলোয়ার হোসেন মৃত্যুবরন করেছেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী নিজেই।

বাদী আক্তারা বেগম মামলায় উল্লেখ করেছেন, আসামি ইয়াছিন আলী পরসম্পদ ও যৌতুকলোভী। ২০১৫ সালের ৩ মার্চ ১,৮৯,৯৯৯/- টাকা দেনমোহর ধার্য্যে করিয়া যৌতুক বাবদ ৩ লক্ষ টাকার মধ্যে নগদ ২ লক্ষ টাকা বুঝিয়া পাইয়া উপজেলার উত্তর দলগ্রাম এলাকার আনোয়ার হোসেনের মেয়ে আকতারা বেগমকে বিয়ে করেন। বর্তমানে তাদের সংসারে ১বৎসর ৬ মাসের একটি মেয়ে সন্তানও রয়েছে।

বিয়ের কয়েকমাস যেতে না যেতে অন্যান্য আসামীগনের কু-পরামর্শে শুরু হয় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী আকতারার উপর অমানুষিক নির্যাতন।

এমতাবস্থায় ২০১৯ সালের ১৯ শে জুন মামলার সকল আসামীগন ইয়াছিন আলীর বাড়ীতে একত্রিত হইয়া যৌতুক বাবদ বাকী ১ লক্ষ টাকার জন্য চাপ দিলে স্ত্রী অস্বীকার করা মাত্রই ইয়াছিন আলী লাঠি দ্বারা মারিয়া স্ত্রীর শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তাক্ত জখম করে এবং সকল আসামীগন তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কিলঘুষি মারিয়া ফুলা জখম করে।
পরবর্তীতে আকতারা বেগমের বাড়ীতে সংবাদ পেলে ঘটনাস্থলে আসিয়া রক্তাক্ত অবস্থায় আকতারা কে উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। যাহার ভর্তি রেজিঃ নং-৫৭০৮/২২,বেড নং-২৫।

শনিবার (৭ নভেম্বর) বাদী আকতারা বেগম জানান,মামলা চলমান থাকাকালীন আমার স্বামী ইয়াছিন আলী মুয়াজ্জিন গত ৫ নভেম্বর আবারও বিয়ে করেছেন।

এ বিষয় ১ নং আসামী ইয়াছিন আলী মুয়াজ্জিনের সাথে কথা হলে তিনি ৫ নভেম্বর বিয়ে করার বিষয়টি স্বীকার করে জানান তার প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর আকতারা কে ২য় বিয়ে করেন,২য় বিয়ের স্ত্রীকে কোর্টের মাধ্যমে ডিভোর্স দিয়ে গত ৫ নভেম্বর হাতীবান্ধা উপজেলার নলডাঙ্গা এলাকার সোলেমানের মেয়ে বিউটিকে বিয়ে করেন। ২য় স্ত্রী ডিভোর্স লেটার গ্রহন করেছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডির্ভোস লেটার গ্রহন করেনি। ডিভোর্স লেটার গ্রহন করেনি অথচ বিয়ে করলেন এমন প্রশ্নের জবাব তিনি দিতে পারেন নি।

বর্তমানে স্বামীর অমানুষিক নির্যাতনের শিকার আকতারা বেগম এক কন্যা শিশু সন্তান নিয়ে তার পিতার বাড়ী আতঙ্কের মধ্যে দিনযাপন করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *