গ্রাম বাংলা ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের প্রধান আসামি নূর হোসেন বলেছেন, নেতারাই আমাকে ভারত পাঠিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের বারাসাত আদালতে গতকাল তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেছেন, নজরুলকে তিনি খুন করেননি। তিনি র্যাবকে কোনো টাকাও দেননি। এ দিকে, নূর হোসেনকে ওই আদালত ১৪ দিনের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
অপর দিকে, নূর হোসেনকে দেশে ফেরত আনার জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকার পক্ষ থেকে আবেদন করা হয়েছে। আবেদনটি আদালতে নথিভুক্তির কথাও জানা গেছে। কলকাতায় বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনার আবিদা ইসলাম বিকেলে সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, গত ২২ জুন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী বারাসাতের আদালতে নূর হোসেনকে ফেরত চেয়ে আবেদন করেন তিনি। আদালত আবেদনটি নথিভুক্ত করেছেন।
গত ১৪ জুন কলকাতার উপকণ্ঠে রাজারহাটের বাগুইহাটি এলাকা থেকে নূরকে গ্রেফতার করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। ১৯ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকাকে তা জানিয়ে দিয়েছে নয়াদিল্লি। আট দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল সোমবার স্থানীয় সময় বেলা ২টায় নূর হোসেন ও তার দুই সহযোগীকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সদর বারাসাতের বিচার বিভাগের মুখ্য হাকিমের আদালতে তোলা হয়। এ উপলে সকাল ৯টায় তিনজনকে বাগুইহাটি থানা থেকে দেশবন্ধু নগর সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীার জন্য নেয়া হয়। গতকাল তাদের বিরুদ্ধে রিমান্ড বা জামিন আবেদন করা হয়নি। আগামী ৬ জুলাই পর্যন্ত নূর হোসেন ও তার দুই সঙ্গীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। ৭ জুলাই তাদের আবারো আদালতে তোলা হবে।
এ দিকে, গতকাল আদালতে হাজিরের সময় নূর হোসেন বলেছেন, তিনি ইচ্ছে করে ভারতে যাননি। তাকে নেতারাই পাঠিয়েছেন। তবে কোন নেতারা পাঠিয়েছেন, তা তিনি বলেননি। তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক কারণেই তাকে ভারতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে ভারতের আদালত নূর হোসেনকে ১৪ দিনের জেল হাজতে পাঠিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম, তার তিন বন্ধু ও ড্রাইভার এবং সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার ড্রাইভারকে অপহরণ করা হয়। ৩০ এপ্রিল ও ১ মে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয় শীতলক্ষ্যা নদী থেকে। এই ঘটনায় নূর হোসনকে প্রধান আসামি করে ফতুল্লা থানায় একটি মামলা করা হয়। ঘটনার পর নজরুলের পরিবারের পক্ষ থেকে র্যাবকে দায়ী করা হয়। এই ঘটনায় ইতোমধ্যে তিন র্যাব কর্মকর্তা লে. কর্নেল তারেক, মেজর আরিফ ও লে. কমান্ডার রানা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। এই হত্যায় তাদের সংশ্লিষ্টতার তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নূর হোসেনকে দেশে ফেরত এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে এই হত্যাকাণ্ডে আরো অনেক রাঘববোয়াল জড়িয়ে পড়তে পারে। ইতোমধ্যে এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে নারায়ণগঞ্জের এক গডফাদারের নাম উঠে এলেও এখনো তাকে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় নেয়া হয়নি।